কর্মক্ষেত্রে নিষিদ্ধ হচ্ছে ফেসবুক
২৫ অক্টোবর ২০১০ভয় পেলেন নাকি? আপাতত খবরটা শুধু জার্মানির জন্য৷ বাংলাদেশ বা ভারতের ক্ষেত্রে অফিসে ফেসবুক নিষিদ্ধের কোন সংবাদ এখনো নেই৷ জার্মানির ব্যবসা সংক্রান্ত সাপ্তাহিক পত্রিকা ভির্টশাফ্টসভোখে জানাচ্ছে, ফ্রাঙ্কফুর্ট স্টক এক্সচেঞ্জে নিবন্ধিত জার্মানির সেরা ৩০ সংস্থা ফেসবুক নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে৷ বিশেষ করে ব্যবসায়িক গোপনীয়তা মানে প্রতিদ্বন্দ্বীদের গুপ্তচরবৃত্তি'র এক জায়গা হিসেবে দেখা দিয়েছে কর্মীদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট৷ তাছাড়া এসবের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানোরও আশঙ্কা রয়েছে, যা যেকোন অফিস নেটওয়ার্কের জন্য হুমকি৷
এধরণের হুমকি অগ্রহণযোগ্য হওয়ায় কর্মীদের তাই ফেসবুক থেকে দূরে রাখতে চায় জার্মানির বেশকিছু সংস্থা৷ ইউরোপের এই দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক ‘কমার্সব্যাংক'-এর এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নিরাপত্তার কারণে আমাদের অধিকাংশ কর্মীর বাহ্যিক সামাজিক নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সুযোগ নেই৷
নির্মাণ সংস্থা হাইডেলবার্গসিমেন্ট একই কারণে ফেসবুক-টুইটার নিষিদ্ধ করেছে৷ এমনকি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফোক্সভাগেনও জানিয়েছে, তাদের কার্যালয়গুলোতে অনেক সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইট নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷
এসব প্রতিষ্ঠানের আশঙ্কা, তাদের কর্মীরা ফেসবুকে চ্যাটে ব্যবসায়িক গোপনীয়তা ফাঁস করে দিতে পারে৷ তাছাড়া তাদের বন্ধুদের দেয়ালে থাকা লিঙ্কে ক্লিক করে অফিস নেটওয়ার্কে ভাইরাসও ছড়াতে পারে৷ এই শঙ্কা নিতান্ত অমূলক নয় বলে জানিয়েছেন এন্টি-ভাইরাস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপার্সকি'র কর্মকর্তা ক্রিস্টিয়ান ফখ্৷ তিনি বলেন, আগে ভাইরাস ছড়ানোর অন্যতম এক পথ ছিল ই-মেইল৷ এখন তা সামাজিক নেটওয়ার্ক৷
বিলাসি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পোর্শে অবশ্য আরো খানিকটা এগিয়ে৷ কর্পোরেট গুপ্তচরবৃত্তির আশঙ্কায় আগেই সংস্থাটির বিভিন্ন কার্যালয়ে নিষিদ্ধ হয়েছে ফেসবুক৷ অপর সংস্থা ডাইমলার অবশ্য জানাচ্ছে ভিন্ন কারণ৷ সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো নাকি কর্মীদের উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দিচ্ছে৷ তাই নিষিদ্ধ ফেসবুক৷
অবশ্য ডাইমলারের দলে আছে আরো অনেক সংস্থা৷ জার্মানির ৩০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান আশঙ্কা করছে ফেসবুক তাদের কর্মীদের আনুষ্ঠানিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায়৷ তাই, একেবারে মুক্ত অবস্থায় এই সাইট ব্যবহারের সুযোগ দেয়া উচিত নয়৷ তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা ক্লিয়ারসুইফ্ট এর এক জরিপে জানা গেছে এই তথ্য৷
তবে, ৫৬ শতাংশ সংস্থাই ফেসবুক নিষিদ্ধের প্রাথমিক কারণ হিসেবে নিরাপত্তাকেই দুষছেন৷ কিন্তু সবারই মোদ্দা কথা এক, অফিসে ‘নো ফেসবুক'৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই