‘ফাঁসি ও বিজয় দিবস’
৯ ডিসেম্বর ২০১৩সামহয়্যার ইন ব্লগে মশিউরের পোস্টের শিরোনাম, ‘কাদের মোল্লার ফাঁসি ও বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা'৷ লিখেছেন, ‘‘মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়েছে রবিবার৷ সোমবার তার পরিবার কাদের মোল্লার পুনর্বিচার দাবি করেছে৷ আইজি প্রিজনের কথা অনুসারে কাদের মোল্লা যদি মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান তাহলে সময় পাবেন সাতদিন আর যদি না চান তাহলে তার দণ্ড কার্যকর হবে সরকার যেদিন চাইবে সেদিন অর্থাৎ যে-কোনো দিন৷... মূলত ১৬ ডিসেম্বর আমরা বন্ধুদের সাথে, আত্মীয়-পরিজনের সাথে কথা বলে বা ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে বা কাউকে হয়তো ফুল দিয়ে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা বিনিময় করি৷ তেমনি ১৫ ডিসেম্বর রাতে কাদের মোল্লার ফাঁসি হতে পারে বিজয় দিবসের সকালে সরকারের তরফ থেকে সাধারণ জনগণের জন্য শুভেচ্ছা৷ যদি এমন কিছু হয় তবে বিজয় দিবসের আনন্দ আর কাদের মোল্লার ফাঁসি এই দুইয়ে মিলে অন্যরকম একটি দিন কাটাবে বাংলাদেশের জনগণ৷''
আমারব্লগে আব্দুল কাদের লিখেছেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল শেষে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে কসাই কাদেরের সাজা দেয়া হয়েছে৷ মৃত্যু পরোয়ানা ইতোমধ্যে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছেছে৷ তার মানে আজ কালের মধ্যেই তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হতে পারে৷
তিনি আরো লিখেছেন, বিগত কিছুদিন ধরে অবরোধ আর হরতালের নামে দেশে বিএনপি ও তাদের দোসর জামাত, শিবির এক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে৷ উদ্দেশ্য একটাই – নির্বাচন নয়, যুদ্ধাপরাধীদের জীবন বাঁচানো৷ নাম দেয়া হচ্ছে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আন্দোলন, কিন্তু আসলে সেটা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করার আন্দোলন৷
ব্লগার কাদেরের প্রশ্ন, ‘‘জামাত-শিবিরকে সমর্থন দিচ্ছে বিএনপি ও তার সমর্থকরা৷ যাদের মোট সমর্থন গোটা দেশের কমপক্ষে ৪০ শতাংশ৷ তার অর্থ গোটা দেশের কমপক্ষে ৪০ শতাংশ লোক বর্তমানে যুদ্ধাপরাধীর বিচার চায় না৷ ....কিভাবে সম্ভব এত বিপুল পরিমাণ মানুষ বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে চায় না?''
এদিকে, মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতিতে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে বিচার নিয়ে প্রশ্ন তুলে অবিলম্বে ফাঁসির রায় স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে৷ সংস্থাটি বলছে, যেখানে কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল, সেখানে আইন পরিবর্তন করে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে৷ অথচ চূড়ান্ত রায়ের পর তাকে এর বিরুদ্ধে আপিলের অধিকার দেয়া হয়নি৷ বিবৃতিতে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ৫ ফেব্রুয়ারি দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে জনবিক্ষোভের মুখে ১৭ ফেব্রুয়ারি আইন পরিবর্তন করা হয় – যা আন্তর্জাতিক সুষ্ঠু বিচারের আদর্শকে লঙ্ঘিত করেছে৷
ডয়চে ভেলে বাংলার ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে স্ট্যাটাস দেয়ার পর অনেক পাঠক তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন৷ যেমন দেব দে লিখেছেন, ‘‘১৯৭১ সালে যখন ৩০ লাখ মানুষ মরেছিল, তখন তারা কই ছিলো?'' আলমগীর হোসেইন এর প্রশ্ন, ‘‘হিউম্যান রাইটস কি মানবাধিকার, নাকি দানবাধিকার সংস্থা?'' ইরফান হোসেনের মন্তব্য, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ‘জামাতাধিকার' সংস্থা৷
শাদ তাজ লিখেছেন, ‘‘যদি দোষী হয়, তবে ফাঁসি হওয়া উচিত৷ যেহেতু বিষয়টা স্পর্শকাতর তাই বিচার আন্তর্জাতিক মানের হওয়া বাঞ্ছনীয়৷ তাছাড়া অনেক পুরো ঘটনা, স্বচ্ছ্ব হওয়া খুবই দরকার, যাতে পরবর্তীতে কোনো ঝামেলা না হয়৷''
সংকলন : অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা : জাহিদুল হক