1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গর্ভপাত বৈধ করার সুপারিশ জার্মান কমিশনের

১৬ এপ্রিল ২০২৪

গর্ভাবস্থার প্রথম ১২ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাতকে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈধ করার সুপারিশ করেছে জার্মান সরকারের নিয়োগ করা এক কমিশন৷

https://p.dw.com/p/4eqNt
জার্মানির মিউনিখে ‘আমার শরীর আমার অধিকার’ লেখা পোস্টার হাতে এক বিক্ষোভকারী৷
গর্ভপাতের অধিকার চেয়ে জার্মানিতে চলছে আন্দোলন৷ছবি: Sachelle Babbar/ZUMA/picture alliance

সিদ্ধান্তটি কার্যকর হলে তা জার্মানির জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মনে করছে কমিশন৷

জার্মানিতে প্রচলিত আইনের ২১৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে দেশটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে গর্ভপাত একটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত৷ যদিও গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসের মধ্যে গর্ভপাত করা হলে আর গর্ভবতী নারীকে কাউন্সেলিং দেওয়া হলে তাকে শাস্তি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়৷ এছাড়াও ধর্ষণের ক্ষেত্রে বা অন্তঃসত্ত্বা নারীর জীবন, শারীরিক বা মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে থাকলে গর্ভপাতের স্পষ্ট অনুমতি রয়েছে৷

কিন্তু বিদ্যমান আইনি কাঠামোটি প্রায় ৩০ বছরের পুরনো হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এটি সমালোচিত হয়ে আসছে৷ জার্মানির বর্তমান জোট সরকারের তিন শরিক দল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস (এসপিডি),  গ্রিনস এবং ফ্রি ডেমোক্র্যাটস (এফডিপি) গর্ভপাতের আইনটিকে আরও শিথিল করতে চাচ্ছে৷

সোমবার (১৫ এপ্রিল)  কমিশন তাদের সুপারিশ পেশ করে গর্ভপাতের উপর পুরোনো সাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে৷

এস. পি. ডি-র রাজনীতিবিদ কাটইয়া মাজট মনে করেন, এই সুপারিশ নেওয়া হলে মনির্দিষ্ট সময়ের আগে গর্ভপাত আর ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে না৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি গর্ভপাত সম্পর্কিত বিধিমালা ফৌজদারি আইনের অন্তর্গত নয় কারণ, আমার দৃষ্টিতে এটি নারীদের কলঙ্কিত করে৷''

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে ২০২৩ সালে গর্ভপাত কাউন্সেলিং কেন্দ্রের সামনে নিজেদের দাবি আদায়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন  বিক্ষোভকারীরা৷
গর্ভাবস্থার প্রথম ১২ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাতকে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈধ করার সুপারিশ করেছে জার্মান সরকারের নিয়োগ করা এক কমিশন৷ ছবি: Helen Whittle/DW

ক্যাথলিক চার্চের উদ্বেগ

ধর্মীয় গোষ্ঠী ও সংগঠনগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে৷ বার্লিনের ক্যাথলিক আর্চবিশপ হেইনার কখ ক্যাথলিক সংবাদ সংস্থাকে  বলেছেন তারা বিদ্যমান আইনটি বহাল রাখাতেই আগ্রহী৷ আর্চবিশপের মতে ‘‘প্রচলিত আইনি কাঠামোটি মায়ের চাহিদা, উদ্বেগ এবং অনাগত সন্তানের সুরক্ষা সবগুলো বিষয়কেই গুরুত্ব দেয়৷''

জার্মান ক্যাথলিকদের কেন্দ্রীয় কমিটি এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে৷ তারা মনে করেন এটি গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে ভ্রুণের সুরক্ষা নষ্ট করবে৷ অপরদিকে  'প্রো ফ্যামিলিয়া' নামের একটি সংস্থা নতুন সুপারিশগুলোকে স্বাগত জানিয়েছে৷

রক্ষণশীল দলগুলো যথারীতি এর বিরোধিতা করেছে৷ জার্মানির বৃহত্তম বিরোধী দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) নেতা ফ্রেডরিখ মেরজ সমালোচনা করে বলেছেন এই ধরনের সংস্কারের মাধ্যমে সরকার ‘দেশে একটি বড় সামাজিক দ্বন্দ্ব চালু করতে যাচ্ছে৷'

ডানপন্থি জনপ্রিয় দল অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)-ও এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে৷ অন্যদিকে সমাজতান্ত্রিক বাম দল সরকারকে সুপারিশগুলোকে একটি খসড়া আইনে পরিণত করে উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়েছে৷

গর্ভপাতের ওপর 'বিজ্ঞাপনের নিষেধাজ্ঞা' ইতিমধ্যেই প্রত্যাহার

সরকার ইতিমধ্যে গর্ভপাত সম্পর্কিত অন্যান্য সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করা শুরু করেছে৷ প্রচলিত আইনের ২১৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে, গর্ভপাতের বিজ্ঞাপনের উপর নিষেধাজ্ঞাও ইতিমধ্যে বাতিল করা হয়েছে৷ 'সাইডওয়াক হ্যারাসমেন্ট' নামে পরিচিত একটি নিষেধাজ্ঞা আইন হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পথে রয়েছে৷

ক্রিস্টোফ হাসেলবাখ/এসএইচ