1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির ‘ফোক্সভাগেন’এর নতুন রেকর্ড

১৫ জানুয়ারি ২০১২

বাংলাদেশে যাকে আমরা ‘ভক্স ওয়াগন’ নামে চিনি, নিজের জন্মভূমি জার্মানিতে তার নাম ‘ফোক্সভাগেন’৷ ইউরোপের এক নম্বর এই গাড়ি নির্মাতা রেকর্ডের পর রেকর্ড করে চলেছে৷ গত বছর গাড়ি বিক্রিতে তারা ৮০ লক্ষের সীমানা পেরিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/13jte
গত বছর তারা সারা বিশ্বে মোট ৮১ লক্ষ ৫৬ হাজার গাড়ি বিক্রি করেছে ফোক্সভাগেনছবি: AP

অ্যামেরিকার ডেট্রয়েটে এখন চলছে মোটর শো৷ বিশ্বের সব নামিদামি ব্র্যাণ্ডের গাড়ি দেখানো হচ্ছে সেখানে৷ সেইসঙ্গে জানা যাচ্ছে সদ্য শেষ হওয়া ২০১১ সালে কোন কোম্পানি কত গাড়ি বিক্রি করলো তার খবর৷ ফোক্সভাগেন জানিয়েছে, গত বছর তারা সারা বিশ্বে মোট ৮১ লক্ষ ৫৬ হাজার গাড়ি বিক্রি করেছে৷ এর মধ্যে ‘ভিডব্লিউ', মানে ফোক্সভাগেন ব্র্যাণ্ড ছাড়াও রয়েছে গ্রুপের অধীনে থাকা অন্যান্য গাড়ি বিক্রির সংখ্যা৷ যেমন আউডি, সিয়াট, স্কোডা, বেন্টলে, বুগাট্টি এবং লাম্বোরঘিনি৷

ফোক্সভাগেন কোম্পানির প্রধান মার্টিন ভিন্টারকর্ন ডেট্রয়েট মোটরগাড়ি প্রদর্শনীতে এই সাফল্যের কথা উল্লেখ করতে ভোলেননি৷ একই সাথে তিনি পরিবেশ বান্ধব ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরির পরিকল্পনার উপর আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের ফোক্সভাগেন কোম্পানির ক্ষেত্রে ব্যাপারটা হল - কোন পরিকল্পনা যখন পূর্ণতা পায় তখনই আমরা সেটা বাস্তবায়নে লেগে পড়ি৷ আমরা স্পষ্ট অঙ্গীকার করেছি যে, ২০১৩ সালে ইলেকট্রিক কার আমরা বাজারে আনবো যেমন ই-আপ, ই-গল্ফ জাতের গাড়ি৷ আর চলতি বছরের শেষে অ্যামেরিকায় আমরা ছাড়বো জেটা হাইব্রিড কার৷ যার নমুনা আমরা এই ডেট্রয়েটে উপস্থিত করেছি৷''

ভিন্টারকর্নের এই মন্তব্য ফোক্সভাগেনের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগকে কিছুটা হলেও নমনীয় করবে বলে আশা করা যায়৷ কেননা গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের চেষ্টা করছে, সেটার বিরুদ্ধে নাকি ফোক্সভাগেন লবি করছে - এমন অভিযোগ শোনা যায়৷

এছাড়া কোম্পানিটি ২০১৮ সালের মধ্যে তাদের গাড়ির তৈরির কারণে পরিবেশের উপর যে প্রভাব পড়ছে তার মাত্রা ২৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে চায়৷ এ লক্ষ্যে তারা ‘থিঙ্ক ব্লু. ফ্যাক্টরি' এই শ্লোগান নিয়ে কাজও শুরু করে দিয়েছে৷

VW Passat V6
ফাইল ফটোছবি: AP

কিছু সাফল্যকথা

ফোক্সভাগেনের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ২০১০ সালের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি গাড়ি বিক্রি করেছেন৷ ফলে টয়োটাকে টপকে গেছেন তারা৷ প্রায় তিন বছর ধরে বিশ্বে গাড়ি বিক্রিতে টয়োটাই শীর্ষে ছিল৷ গত বছর মার্চে জাপানে ভয়াবহ সুনামি ও ভূমিকম্পের কারণে টয়োটার বিক্রিতে কিছুটা ভাটা পড়েছে৷ তারপরও জাপানি এই কোম্পানিটি মোট ৭৯ লক্ষ গাড়ি বিক্রি করেছে বলে জানা গেছে৷

এদিকে, ২০১১ সালে গাড়ি বিক্রিতে শীর্ষে থাকতে পারে মার্কিন কোম্পানি জেনারেল মোটরস৷ যদিও এখন পর্যন্ত তাদের পরিসংখ্যান জানা যায়নি তবুও বছরের প্রথম তিন মাসের তথ্যের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের বিক্রি প্রায় ৯০ লক্ষ হতে পারে৷

বাজারজাতকরণ ও সেবার মান উন্নত হওয়ায় ফোক্সভাগেনের ব্যবসা ভাল হয়েছে বলে কর্মকর্তারা বলছেন৷ এছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গাড়ি বিক্রি হয় যে দুটি দেশে, সেই চীন ও যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ির চাহিদা ছিল বেশি৷ জার্মানিতেও ক্রেতারা নতুন গাড়ির প্রতি বেশ আগ্রহ দেখিয়েছেন গত বছর৷

ফোক্সভাগেনের চেয়ারম্যান মার্টিন ভিণ্টারকর্ন বলছেন, এ বছরও ব্যবসা ভাল হবে বলেই তাঁর ধারণা৷ ইউরোপে ভাল করতে না পারলেও চীন ও উত্তর অ্যামেরিকা দিয়ে উতরে যাওয়া যাবে বলে মনে করছেন ভিণ্টারকর্ন৷

কোম্পানিটি গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে মোট তিন লক্ষ ২৪ হাজার চারশো দুইটি গাড়ি বিক্রি করেছে, যেটা এর আগের বছরের চেয়ে প্রায় সাড়ে ২৬ শতাংশ বেশি৷ ২০১৮ সালের মধ্যে উত্তর অ্যামেরিকায় ১০ লক্ষ গাড়ি বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জার্মান এই গাড়ি নির্মাতা৷ সে সঙ্গে ঐ সময়ের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানিতে পরিণত হতে চায় ফোক্সভাগেন৷

কোম্পানির অ্যামেরিকা শাখার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রাইনার মিশেল বলছেন, তাদের লক্ষ্য, যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায় চলা প্রতি ১০০ গাড়ির মধ্যে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয়টি হতে হবে ফোক্সভাগেনের৷ এ লক্ষ্যে কোম্পানিটি গত বছর টেনেসি রাজ্যে একটি কারখানা তৈরি করেছে৷ সেখানে প্রতি বছর প্রায় দেড় লক্ষ গাড়ি তৈরি করা যাবে৷ এজন্য ফোক্সভাগেন প্রায় একশো কোটি ডলার খরচ করেছে৷ তবে এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ির বাজারের ধরণ সম্পর্কে হালনাগাদ থাকতে পারবে তারা৷ এছাড়া মুদ্রা বিনিময় হারের জন্য যে খরচ হতো সেটাও বাঁচাতে পারবে৷

শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, চীন ও ভারতেও গাড়ি তৈরির কারখানা করেছে ফোক্সভাগেন৷ পরবর্তী ছয় বছরের মধ্যে সেসব দেশে বিক্রির সংখ্যা ১০ লক্ষে পৌঁছানোর পরিকল্পনা তাদের৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য