গ্যাস নিয়ে বিতর্কের মধ্যে রাশিয়া সকাশে স্লোভাক প্রধানমন্ত্রী
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪রোববার স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো পূর্ব ঘোষণা ছাড়া মস্কোয় গিয়ে পৌঁছান। রোববারই তার সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের বৈঠক হয়। স্লোভাকিয়া এবং রাশিয়া দুই তরফই জানিয়েছে, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। এই বৈঠককে চিহ্নিত করার হয়েছে কাজ চালানোর বৈঠক বা ওয়ার্কিং মিটিং হিসেবে।
ইউরোপের আরো অনেক দেশের মতোই রাশিয়ার গ্যাসের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল স্লোভাকিয়া। শীতের মরশুমে গ্যাসের চাহিদা আরো বৃদ্ধি পায়। উল্লেখ্য, ইউক্রেনের উপর দিয়ে গ্যাস লাইন স্লোভাকিয়া পৌঁছায়। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউক্রেন রাশিয়ার এই গ্য়াসের লাইন বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে স্লোভাকিয়ায় গ্যাস পৌঁছাচ্ছে না। কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব, তা নিয়ে বার বার আলোচনা হয়েছে কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। কিয়েভ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা গ্যাসের লাইন চালু করতে দেবে না। এই পরিস্থিতিতেই পুটিনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসেন ফিকো।
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রী ইউরোপীয় ইউনিয়নের তৃতীয় সদস্য, যিনি এই যুদ্ধের পরিস্থিতি রাশিয়ায় গিয়ে পুটিনের সঙ্গে বৈঠক করলেন। এর আগে অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর এবং হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী এই কাজ করেছিলেন।
এদিনের বৈঠকের পর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে তবে দুই নেতা যৌথ প্রেস বিবৃতি দেবেন না।
স্লোভাকিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, গ্যাস সংকটের মোকাবিলা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাপ্তি নিয়ে দুই নেতার আলোচনা হয়েছে।
সমাজমাধ্যমে ফিকো একটি পোস্টও করেছেন। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, তার এই সফরের বিষয়ে গত শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের তিনি জানিয়েছিলেন। ফিকোর দাবি, গত বৃহস্পতিবার গ্যাস নিয়ে একটি প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। তার উত্তরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিজের অভমত স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, কোনোভাবেই গ্যাসের সাপ্লাই লাইন খোলা হবে না। এরপরেই পুটিনের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেন ফিকো।
ফিকো জানিয়েছেন, শুধু গ্যাস নয়, ইউক্রেন রাশিয়ার পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপর নিষেধাজ্ঞাকেও সমর্থন করছে। এরফলেও প্রবল সমস্যা হচ্ছে স্লোভাকিয়ার। পরমাণু বিদ্যুতের উপর ভীষণভাবে নির্ভরশীল স্লোভাকিয়া।
ফিকো এদিন জানিয়েছেন, পুটিন গ্যাস পাঠাতে আগ্রহী। বৈঠকে সেই বার্তাই দিয়েছেন তিনি। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নিজের অবস্থান পরিবর্তন না করলে গ্যাস পাওয়া অসম্ভব। ফিকোর বক্তব্য, পুটিনের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এদিকে স্লোভাকিয়ায় ফিকোর বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন, পুটিনের সঙ্গে বৈঠক না করে প্রধানমন্ত্রীর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বসা উচিত ছিল।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)