চীনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অভিযোগ ভাঁওতা?
৮ মে ২০২০মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প করোনা সংকটের জন্য বার বার চীনকেই সরাসরি দায়ী করে চলেছেন৷ তবে প্রতিবার ভিন্ন অভিযোগ তুলছেন ট্রাম্প৷ মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতে, চীন ‘ভুল করে' করোনা সংকট সৃষ্টি করে সেই সংক্রান্ত তথ্য গোপন রেখেছে৷ তারপর চীনের বিরুদ্ধে তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ ছিল, উহান শহরের গবেষণাগারে ইচ্ছাকৃতভাবে এই ভাইরাস তৈরি করা হয়েছিল৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সেই সুরে সুর মিলিয়েছেন৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞ স্পষ্ট রায় দিয়েছেন যে, কোভিড-১৯ কোনোমতেই মানুষের তৈরি হতে পারে না৷
এমন অভিযোগের সপক্ষে ট্রাম্প ও পম্পেও অবশ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ দেখাতে পারেননি৷ ট্রাম্প একবার দাবি করেছিলেন যে, তিনি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য ঘেঁটে এমন প্রমাণ পেয়েছেন৷ কিন্তু শীর্ষ মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তার দপ্তর প্রকাশ্যে এমন দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছে৷ তারপর অ্যামেরিকাসহ পাঁচটি ইংরেজিভাষী দেশের তথাকথিত ‘ফাইভ আইস ইনটেলিজেন্স' গোয়েন্দা সহযোগিতা কাঠামোর পনেরো পৃষ্ঠার এক দলিল উদ্ধৃত করে এমন দাবি করে অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদপত্র৷ সেই দাবি অনুযায়ী, করোনা ভাইরাসের মহামারির বিষয়ে চীন মিথ্যা কথা বলেছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করেছে৷
কিন্তু এমন দাবিকে ঘিরে প্রবল বিভ্রান্তি দেখা যাচ্ছে৷ ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস গোয়েন্দা সংস্থার এমন কোনো রিপোর্টের অস্তিত্ব সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন৷ বিবিসি রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ বিষয়ে নীরব থেকেছেন৷ অস্ট্রেলিয়া সরকারের মতে, সবার জন্য উন্মুক্ত ‘ওপেন সোর্স' নথিপত্রকেই গোয়েন্দা তথ্য হিসেবে তুলে ধরায় এমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে৷
এবার জার্মানির সম্প্রচার নেটওয়ার্ক এনডিআর দাবি করেছে যে, জার্মান গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি-ও ‘ফাইভ আইস' গোয়েন্দা কাঠামোর চীন সংক্রান্ত দলিলের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে৷ বিএনডি জার্মান সংসদে গোয়েন্দা সংস্থা সংক্রান্ত কমিটির সদস্যদের এ কথা জানিয়েছে বলে এনডিআর দাবি করেছে৷ বিএনডি নাকি সরাসরি ‘ফাইভ আইস' গোয়েন্দা কাঠামোর সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিল৷ সেই প্রশ্নের উত্তরে এমন কোনো দলিলের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সহযোগিতা নেটওয়ার্ক৷ বিএনডি অবশ্য এনডিআর-এর এই দাবি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)