উত্তপ্ত আসাম
৭ আগস্ট ২০১২গত ১০ দিন শান্ত থাকার পর আসামে নতুন করে জাতিদাঙ্গায় গত দু'দিনে মারা গেছে আরও পাঁচজন৷ ঐ সহিংস ঘটনার পর কোকরাঝাড়ে এবং চিরাং'এ অনির্দিষ্টকালের জন্য আবার কারফিউ জারি করা হয়৷ সহিংসতা আবার ফিরে আসার প্রতিবাদে স্থানীয় মানুষ কোকরাঝাড়-ধুবরি সীমান্তে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে৷ নিরাপত্তা বাহিনী তাঁদের হটিয়ে দেয়৷
শান্তি ও সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা প্রসঙ্গে আসামের সাংবাদিক ডয়চে ভেলেকে বললেন, সুশীল সমাজের যেভাবে এগিয়ে আসা উচিত ছিল তা হয়নি৷ হলেও তা বিক্ষিপ্তভাবে৷ তবে তরুণ প্রজন্ম কিছুটা সাড়া দিলেও বুদ্ধিজীবীদের তরফে তেমন চেষ্টা হয়নি৷
আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো সিবিআই'কে দিয়ে জাতিদাঙ্গার তদন্ত করানোর দাবি জানিয়েছেন৷ জাতি দাঙ্গায় এ পর্যন্ত ৭৩ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছেন তিনি৷ ত্রাণ শিবিরে আরো ১৬ জনের মৃত্যুর কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৭০ জনকে৷
অন্যদিকে যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সরকারি রিলিফ ক্যাম্পে শরণার্থীদের রাখা হয়, তা এক কথায় অকথ্য৷ গরু-ছাগলের মতো গাদাগাদি করে থাকা, যেখানে ৪০০ লোকের থাকার কথা, সেখানে আছে দু'হাজার৷ ওষুধ নেই, পানীয় জল নেই৷ ম্যালেরিয়া, ডাইরিয়ার মতো রোগের সংক্রমণ বাড়ছে৷ দু'বছরের নীচে ৮ হাজার শিশু অসুস্থ৷ অবিলম্বে ৪ হাজার গর্ভবতী মহিলার জরুরি চিকিৎসা দরকার৷ তবু শরণার্থীরা ঘরে ফিরতে ভয় পাচ্ছে৷
কবে তাঁরা ঘরে ফিরতে পারবে তা অনিশ্চিত৷ তার ওপর বিভিন্ন বোড়ো সংগঠনের দাবি, যাঁদের পুনর্বাসন দেয়া হবে তাঁদের কাছে যেন ভোটার কার্ড বা রেশন কার্ডের মতো সরকারি কাগজপত্র থাকে৷ সরকার তা মেনে নিয়েছে কিছুটা৷ সন্দেহ, বাইরের কিছু লোক শিবিরে আশ্রয় নিয়ে গন্ডগোল পাকাবার চেষ্টা করছে৷ এইসব কারণে পুনর্বাসনের কাজটা জটিল ও প্রলম্বিত হবে এবং ঘরছাড়া মানুষদের দুর্ভোগ দীর্ঘায়িত হবে৷
উল্লেখ্য, জুলাই মাসের প্রথম দিকে আসামে শুরু হয় বাংলাভাষী মুসলিম অভিবাসী ও বোড়ো উপজাতিদের মধ্যে জাতিদাঙ্গা যার কেন্দ্রবিন্দু সম্ভবত জমির দখল৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ