‘জামায়াত নিষিদ্ধ হবে'
১৫ মার্চ ২০১৪মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে শুক্রবার বলেন, ‘‘ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই৷ তবে যুদ্ধাপরাধের দায়ে চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছে৷''
গত বছরের ১লা আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট৷ অর্থাৎ, এ আদেশের ছয় মাসেরও বেশি সময় পর দলটি নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকারের এ পরিকল্পনার কথা বললেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী৷
তবে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াত নিষিদ্ধ হবে কিনা, তা মন্ত্রী বলতে পারেন না৷ এটা মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিষয়৷ তাদের রায়ের ওপরই আসলে নির্ভর করছে জামায়াত যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিষিদ্ধ হবে কিনা – সেই প্রশ্ন৷ তবে এমনটা হলে তা কখন, কোনো মাসে হবে– তা আদালতই বলতে পারে৷'' তিনি বলেন, ‘‘মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ইতিমধ্যেই সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচারের সিদ্ধান্ত হয়েছে ট্রাইব্যুনালে৷ আমরা যতদূর জানি, এর তদন্ত শেষ হয়েছে৷ তাই যে কোনো সময় ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবেন প্রসিকিউটররা৷ তারপর হবে বিচার৷ এখানে সরকারের কিছু করার নেই, পুরোটাই আদালতের এখতিয়ার৷''
তবে শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘‘সরকার চাইলে অবশ্য সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে পারে৷ ট্রাইব্যুনালের একাধিক রায়ে জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলা হয়েছে৷ এছাড়া গত কয়েক বছরে জামায়াত সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবেই নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে৷ সংবিধনের ৩৮ নং অনুচ্ছেদ, বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং সন্ত্রাস দমন আইন – এর যে কোনোটি ব্যবহার করে সরকার জামায়াতকে নির্বাহী আদেশেই নিষিদ্ধ করতে পারে৷ তার জন্য জুন মাস পর্যন্ত বসে থাকার দরকার নেই৷'' এ জন্য সংসদে আলোচনারও কোনো প্রয়োজন নেই বলে তিনি মনে করেন৷
এদিকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকউটর রানা দাসগুপ্ত গত শনিবার ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘ট্রাইব্যুনাল আইনে সংগঠনের বিচারের কথা বলা হলেও, সুনির্দিষ্টভাবে শাস্তি কী হবে তা বলা হয়নি৷ ব্যক্তি এবং সংগঠনের ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও আদালত যা যৌক্তিক মনে করে৷ তবে সংগঠনকে তো আর মৃত্যদণ্ড দেয়া যায় না৷ তাই অপরাধী প্রামাণিত হলে এবং আদালত ইচ্ছে করলে জামায়ত নিষিদ্ধ ও জামায়াতের সব ধরণের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে পারে৷''