জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের হার দ্রুত বাড়ছে
২২ জুন ২০২০বিশ্বজুড়ে করোনা সংকটের মাঝে জার্মানির ‘সাফল্য' অনেক দেশেই নজর কেড়েছে৷ পুরোপুরি লকডাউনের পথে না গিয়ে সামাজিক ব্যবধানের মতো নির্দিষ্ট কিছু বিধিনিয়ম চালু করে সংক্রমণের হার কমানো গেছে৷ পরিস্থিতির উন্নতির পর ধাপে ধাপে সে সব কড়াকড়ি শিথিল করার পরেও সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে থেকেছে৷ কিন্তু রবিবার রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, যে গোটা দেশে সংক্রমণের গড় হার আচমকা বেড়ে ২.৮৮ ছুঁয়েছে৷ এর মানে হচ্ছে, একজন করোনা রোগী ২.৮৮ জনকে সংক্রমিত করছেন৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংখ্যাটা ১ এর নীচে থাকা ভালো৷ শনিবার জার্মানিতে এই হার ছিল ১.৭৯৷ ফলে নতুন করে দুশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে৷ কারণ সংক্রমণ বাড়লে দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা কাঠামোর উপর বাড়তি চাপ পড়তে পারে৷
আচমকা এমন অবনতির পেছনে মূলত কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাকেই দায়ী করা হচ্ছে৷ গ্যোটিঙেনের মতো শহরে অনেক মানুষ সামাজিক ব্যবধান বা কোয়ারান্টিনের নিয়ম মানছেন না বলে অভিযোগ উঠছে৷ রবিবার সেখানে কর্তৃপক্ষকে রাজপথে দাঙ্গা পুলিশ নামিয়ে কোয়ারান্টিন কার্যকর করতে হয়েছে৷ নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যে গ্যুটার্সলো শহরে এক বিশাল কসাইখানার ১,৩০০ জনেরও বেশি কর্মীর শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে৷ ফলে আশেপাশের এলাকার প্রায় ৭,০০০ মানুষকে কোয়ারান্টিনে রাখতে হচ্ছে৷ স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ এই শিল্পখাতে এর আগেও এমন ব্যাপক সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছিল৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আর্মিন লাশেট স্থানীয় পর্যায়ে আবার কড়া বিধিনিয়ম চালু করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না৷ উল্লেখ্য, তিনিই জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের উপর বিধিনিয়ম শিথিল করার জন্য চাপ দিয়ে আসছেন৷
রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, যে স্থানীয় পর্যায়ে সংক্রমণের হার মারাত্মক আকার ধারণ করায় গড় হিসেবের উপরও সার্বিক প্রভাব পড়ছে৷ গত কয়েক সপ্তাহে একাধিক বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, শরণার্থী কেন্দ্র, কসাইখানা ও লজিস্টিক্স কোম্পানিতে এমন ব্যাপক সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে৷ মৌসুমি ফসল তোলার কর্মী ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যেও এমন প্রবণতা দেখা গেছে৷ রবিবারের হিসেব অনুযায়ী জার্মানিতে এখনো পর্যন্ত মোট ১৮৯,৮২২ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন৷ মৃতের সংখ্যা ৮,৮৮২৷
জার্মানির বাকি অংশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কড়াকড়ি শিথিল করার বিষয়ে বিতর্কের অবসান ঘটছে না৷ একদল অবশিষ্ট বিধিনিয়ম আরও শিথিল বা পুরোপুরি তুলে দেবার জন্য চাপ দিচ্ছে৷ অন্য শিবির নতুন করে সংকট এড়াতে সতর্কতা বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করছে৷ তারা সাম্প্রতিক ঘটনাগুলিকে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরছে৷
এসবি/জেডএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ)