জার্মানিতে পড়তে আসা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথোপকথন
৫ ডিসেম্বর ২০১১এমনই একজন জাহিদুর রহমান লিমন৷ পড়ছেন রাইন-ভাল ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপলায়েড সায়েন্সে৷ বিষয় ইউজেবিলিটি ইঞ্জিনিয়ারিং৷ মানুষের সঙ্গে কম্পিউটারের যোগাযোগ নিয়ে পড়াশোনা হয় এই বিষয়ে৷ লিমন মাস্টার্স করছেন৷ কারণ অনার্সটা তিনি করে এসেছেন বাংলাদেশ থেকে, লেদার টেকনোলজিতে৷ জার্মানিতে এসেছেন গত বছর সেপ্টেম্বরে৷ তাঁর কাছে প্রথমেই জানতে চাই, কেন তিনি জার্মানিতে পড়তে এলেন৷
‘‘দুটো কারণ - এক, প্রযুক্তিতে জার্মানি সবচেয়ে সেরা এবং এখানকার লেখাপড়ার মানও বেশ উন্নত৷ এবং দুই, বিনা বেতনে পড়ার সুবিধা৷''
জার্মানিতে আসার আগে লিমন ঢাকার গ্যোয়েটে ইন্সটিটিউট থেকে জার্মান ভাষার উপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন৷ যদিও লেখাপড়ার জন্য ভাষা জানার প্রয়োজন নেই, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজগুলো ঠিকভাবে করতে ভাষা জানাটা জরুরি বলে মনে করেন লিমন৷
তিনি বলছেন, বিদেশি শিক্ষার্থী, যারা স্কলারশিপ ছাড়া জার্মানিতে পড়তে আসে তারা যেন এসেই দিশেহারা হয়ে না পড়ে সেজন্য কিছু ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান প্রথম সেমিস্টারের জন্য স্কলারশিপ দিয়ে থাকে৷ পূর্ববর্তী ফলাফলের উপর নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানগুলোই স্কলারশিপের জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করে থাকে - লিমন যেটা পেয়েছিলেন৷ এজন্য তিনি বাংলাদেশে থাকতেই রাইন-ভাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পাওয়ার পর জার্মান বিভিন্ন ব্যাংকে তার অনার্সের ফলাফল পাঠিয়েছিলেন৷ লিমন বলছেন প্রথম সেমিস্টারে ভাল ফলের উপর নির্ভর করে দ্বিতীয় সেমিস্টারেও স্কলারশিপ জোগাড় করা সম্ভব৷ এবং এভাবে পুরো লেখাপড়াটাই শেষ করা সম্ভব৷
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনেকে পড়তে এসে টাকা জোগাড়ের জন্য পার্ট টাইম চাকরি খোঁজে৷ কিন্তু দুটো একসঙ্গে করতে গিয়ে দেখা গেছে যে, কোনোটাই ঠিকভাবে করা হয়ে ওঠেনা৷ ফলে আসল যে উদ্দেশ্য পড়াশোনা করা, সেটাই ব্যাহত হয়৷
লিমনের কাছে জানতে চেয়েছিলাম পত্রিকার বিভিন্ন বিজ্ঞাপন সম্পর্কে৷ আদৌ কি জার্মানিতে পড়তে আসার জন্য এসব কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা প্রয়োজন? তিনি বললেন, ‘‘কোনো দরকার নেই৷ ঘরে বসে নিজে নিজেই আবেদন করে ভর্তি হওয়া সম্ভব, এমনকি স্কলারশিপও জোগাড় করা সম্ভব৷''
লিমন বলছেন অন্যান্য জায়গার তুলনায় জার্মানিতে জীবনযাপন খরচ অনেক কম৷ বাংলাদেশি টাকায় প্রতিমাসে ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যেই চলা সম্ভব বলে জানান তিনি৷ ‘‘আমি সিগারেট বা অ্যালকোহল খাইনা৷ বিনোদনের জন্যও তেমন খরচ করিনা৷ ফলে প্রতি মাসে থাকা-খাওয়া ও ইন্টারনেট বাবদ দু'শো থেকে সোয়া দু'শো ইউরোর মতো খরচ হয় আমার৷ বাংলাদেশি টাকায় যেটা ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো৷''
সবশেষে লিমনের কাছে প্রশ্ন ছিল পড়ালেখা শেষে চাকরি পাবার সম্ভাবনা সম্পর্কে৷ তিনি বললেন, ‘‘আইটি সেক্টর এবং মেকানিক্যাল ও ইলেকট্রিক্যাল ক্ষেত্রে চাকরির অনেক সুযোগ আছে৷''
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম