জার্মানিতে বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা বন্ধ
১১ অক্টোবর ২০২১জনসাধারণের কাছে করোনা টিকা পৌঁছে দেবার আগে জার্মানির সরকার চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে সবার জন্য বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিল৷ একাধিক সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় গিয়ে পরিচয়পত্র দেখিয়ে সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুই বার এমন পরীক্ষার সুযোগ গ্রহণ করেছেন জার্মানির অনেক মানুষ৷ নেগেটিভ ফল দেখিয়ে সাধারণত ২৪ ঘণ্টার জন্য অনেক জায়গায় প্রবেশের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে৷ ফলে টিকাপ্রাপ্ত ও করোনাজয়ীদের মতো এই করোনা টেস্টের নেগেটিভ ফল দেখিয়ে বাকি মানুষ সাময়িক হলেও অবাধ সুযোগসুবিধা পেয়ে এসেছে৷ সংক্রমণের হার কমে চলায় অনেক বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে৷
সোমবার থেকে আর সেই সুযোগ পাবেন না জার্মানির বেশিরভাগ মানুষ৷ এমন পদক্ষেপের ব্যাখ্যা করে সরকার জানিয়েছে, বেশ কয়েক মাস ধরে জনসংখ্যার একটা বড় অংশের জন্য বিনামূল্যে করোনা টিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করলে টিকার প্রমাণ দেখিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁর মতো বদ্ধ জায়গায় প্রবেশাধিকার পেতে পারেন মানুষ৷ তাই যারা সুযোগ সত্ত্বেও করোনা টিকা নিতে প্রস্তুত নন, তাদের জন্য করদাতাদের অর্থে বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা চালিয়ে যাওয়ার কোনো যুক্তি আর নেই৷ নিজেদের সিদ্ধান্তের পরিণাম হিসেবে এবার থেকে তাদের নিজের পকেট থেকেই করোনা পরীক্ষার মাসুল গুনতে হবে৷ তবে যে সব মানুষ বয়স বা শারীরিক কারণে টিকার আওতার বাইরে রয়েছেন, তাদের উপর মাসুল চাপানো হবে না৷ যেমন ১২ বছরের কম বয়সি শিশু-কিশোর বা দুর্বল প্রতিরোধশক্তি সম্পন্ন মানুষ৷ এমন ব্যতিক্রমের এক বিস্তারিত তালিকাও প্রকাশ করেছে জার্মান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়৷
বলা বাহুল্য এমন সিদ্ধান্তকে ঘিরে বিতর্ক কম নয়৷ সুযোগ সত্ত্বেও করোনা টিকা নিতে প্রস্তুত নয় এমন মানুষের ক্ষোভ তো রয়েছেই৷ সেইসঙ্গে কিছু বিশেষজ্ঞও এমন সিদ্ধান্তের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছেন৷ আর্থিক কারণে করোনা পরীক্ষা কমে গেলে সংক্রমণের হার আরও বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করছে চিকিৎসকদের এক সংগঠন৷ বিশেষ করে শীতের মাসগুলিতে এমনিতেই যখন করোনা সংক্রমণের হার বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে, ঠিক সে সময়ে বিনামূল্যে পরীক্ষার সুযোগ বন্ধ করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন তাঁরা৷
অন্যদিকে বিনামূল্যে করোনা টেস্ট বন্ধ হওয়ার কারণে আরও অনেক মানুষ করোনা টিকা নিতে এগিয়ে আসবেন বলে আশা করছেন সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের কার্ল লাউটারবাখের মতো কিছু বিশেষজ্ঞ৷ সপ্তাহান্তেই অনেক শহরে টিকা নিতে মানুষের ভিড় দেখা গেছে৷ করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠা অনেক মানুষও ছয় মাসের ছাড়পত্রের মেয়াদ শেষ হবার আগে টিকা নিতে এগিয়ে আসছেন৷ তবে জার্মানিতে সত্যি কত মানুষ করোনা টিকার সব প্রয়োজনীয় ডোজ নিয়েছেন, সে বিষয়ে বিভ্রান্তি থাকায় সমালোচনা বাড়ছে৷ রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের হিসেব অনুযায়ী সেই হার প্রায় ৬৫ শতাংশ হলেও বাস্তবে আরও অনেক মানুষ করোনা টিকা নিয়েছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)