জার্মানি সশস্ত্র ড্রোন কিনতে পারে
৩ জুলাই ২০১৪স্যুডডয়েচে সাইটুং পত্রিকার সাক্ষাৎকারে ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেছেন, একটি অভিযানের ক্ষেত্রে জার্মান সংসদ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, অকুস্থলে সৈন্যদের সুরক্ষার জন্য ড্রোনে অস্ত্র আরোপের প্রয়োজন আছে কিনা৷ নয়তো সামরিক সংঘাতে ড্রোন ব্যবহার নিয়ে জার্মানিতে একটি নীতিগত বিতর্ক আছে৷ জার্মানি শুধুমাত্র নজরদারি এবং খোঁজখবরের কাজে চালকবিহীন বিমান ব্যবহার করে থাকে – আফগানিস্তানের মতো স্থানে, যেখানে জার্মান সৈন্যরা নিয়োজিত৷ সশস্ত্র সংঘাতের কাজে ড্রোন ব্যবহার জার্মানদের কাছে – এ' পর্যন্ত – অকল্পনীয়৷ এমনকি নজরদারির কাজে ড্রোন ব্যবহারও বহু জার্মানের কাছে ন্যক্কারজনক, কেননা তা অতীতের ফ্যাসিস্ট এবং কমিউনিস্ট শাসন ও শাসকদের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়৷
ড্রোন তৈরিতে দশ বছর
অস্ত্রসজ্জা সম্ভব, ইউরোপের নিজস্ব তেমন একটি ড্রোন সৃষ্টিতে দশ বছর সময় লেগে যাবে বলে ফন ডেয়ার লাইয়েন মন্তব্য করেছেন৷ তবুও তিনি চান যে, জার্মানি এই ড্রোন প্রকল্পের জন্য ইউরোপীয় সহযোগীদের খোঁজ করুক৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদে ফন ডেয়ার লাইয়েন-এর পূর্বসূরি টোমাস ডেমেজিয়ের গত বছরই জার্মান বিমানবাহিনীর জন্য কমব্যাট ড্রোন কেনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন৷ সামরিক বাহিনীর ড্রোন না থাকাটা একটা ঘাটতি বলে তাঁর মনে হয়েছিল৷ অথচ গত বছরই জার্মানি ‘ইউরো হক' নামধারী একটি চালকবিহীন পর্যবেক্ষণ বিমান তৈরির কর্মসূচি পরিত্যাগ করে – যদিও তার ফলে প্রায় বিশ কোটি ইউরো জলে যায় – কেননা ইউরো হক-এর উড়ালের অনুমতি ছিল না৷ কাজেই জার্মানি এখন ইসরায়েলি ‘হেরন' পর্যবেক্ষণ ড্রোন ভাড়া করতে বাধ্য হচ্ছে৷
ইসরায়েলি এবং মার্কিনি মডেল
নয়তো দু'টি মডেল কেনার কথা ভাবা হচ্ছে : প্রথমে ইসরায়েল এয়ারক্রাফট ইন্ডাস্ট্রি-র ‘হেরন টি-পি' ড্রোন৷ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এটি ব্যবহার করে থাকে৷ ১৪ মিটার লম্বা এবং ২৬ মিটার উইং-স্প্যানের এই ড্রোনটির দাম পঞ্চাশ লক্ষ ডলার৷ প্রায় পাঁচ টন ওজনের ড্রোনটি একটানা ৩৬ ঘণ্টা উড়তে সক্ষম৷ জার্মান সরকার অপর যে ড্রোনটি কেনার কথা ভাবছেন, সেটি হল মার্কিন ‘এম-কিউ-৯ রিপার'৷ এটির নির্মাতা জেনারেল অ্যাটমিক্স নামধারী একটি মার্কিন সংস্থা৷ ১১ মিটার লম্বা, চার মিটার উচ্চতার এবং বিশ মিটার বিস্তারের এই ড্রোনটি ১৫ কিলোমিটার উচ্চতায় প্রায় দু'হাজার কিলোমিটার অবধি উড়তে পারে এবং ২৭ ঘণ্টা আকাশে থাকতে পারে৷ সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩৭০ কিলোমিটার৷ সাধারণত এই ড্রোনটিতে লেজার-পরিচালিত ‘হেলফায়ার' রকেট ও দু'শো কিলোগ্রাম বিস্ফোরকের বোমা বসানো হয়৷ চারটি ড্রোনের দাম (২০১১ সালের ক্যাটালগ অনুযায়ী) পাঁচ কোটি ষাট লাখ ডলার৷ এ যাবৎ ব্যবহার করা হয়েছে পাকিস্তানে, বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে৷
এসি/এসবি (ডিপিএ, এএফপি)