জার্মান সংসদে পতিতাবৃত্তি বিষয়ক আইন নিয়ে বিতর্ক
৫ জুন ২০১৬দোসরা জুন ছিল আন্তর্জাতিক যৌনকর্মী দিবস৷ সেই দিনেই জার্মান সংসদ পরিকল্পিত প্রস্তাবিত পতিতাবৃত্তি আইনটি নিয়ে প্রথমবারের মতো আলোচনা করেছে৷ জার্মানিতে ২০০১ সালে গণিকাবৃত্তিকে বৈধ করা হয়৷ তখনকার চ্যান্সেলর গেরহার্ড শ্রোয়েডার তখন গণিকাবৃত্তিকে একটি ‘পরিষেবা' বলে ঘোষণা করেছিলেন৷ কিন্তু তখন থেকে যে হারে মহিলাদের অংশত ভুয়ো আশা ও প্রলোভন দেখিয়ে পূর্ব ইউরোপ বা আফ্রিকা থেকে জার্মানিতে নিয়ে এসে শোয়েজিগ-উল্লেখিত ‘অমানবিক পরিস্থিতিতে' জার্মানির বিভিন্ন রেজিস্ট্রিকৃত ও অ-রেজিস্ট্রিকৃত গণিকালয়গুলিতে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে ও হচ্ছে, তাতে সরকারের যে কিছু একটা করা উচিৎ, সেটা সকলেই উপলব্ধি করতে পারছিলেন৷
কিন্তু সেটা যে কি,তা নিয়ে দৃশ্যত এখনও মতানৈক্য আছে৷ গণিকাদের বাধ্যতামূলকভাবে রেজিস্ট্রেশন অর্থাৎ নাম লেখাতে বাধ্য করার অর্থ, তাদের গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ করা৷ তবুও সরকারপক্ষ এটাকে অন্যায় মনে করছেন না, এমনকি গণিকাদের সম্মতি নিয়ে রেজিস্ট্রেশনের কথাও ভাবা হচ্ছে৷ সঙ্গে থাকছে অন্তঃসত্ত্বা গণিকাদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা, অথবা সাধারণভাবে গণিকাদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা৷ এ সব নিয়েই আলোচনা হচ্ছে৷
অন্যদিকে কিছু বিধিনিষেধেরও প্রয়োজন, কেননা, জার্মানির পরিবার মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘জার্মানিতে একটা আলুভাজার দোকান খোলা যত কঠিন, একটি বেশ্যালয় খোলা তার চেয়ে সহজ৷'' তাই পতিতালয়গুলির জন্য সরকারি লাইসেন্সের কথা ভাবা হচ্ছে৷
এছাড়া পতিতালয়গুলো যে টেলিফোন কোম্পানির মতো ‘ফ্ল্যাট রেট' চালু করেছে, সেটাও নিষিদ্ধ করার কথা ভাবা হচ্ছে৷ আর থাকছে পতিতার গ্রাহকদের জন্য কন্ডোম ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা৷ জোর করে যাদের পতিতাবৃত্তিতে আসতে বাধ্য করা হয়েছে, জেনেশুনে তাদের কাছে যাওয়া মানবপাচার সংক্রান্ত আইনের আওতায় অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে৷
দুই বিরোধী দল বামদল ও সবুজদের মতে কিন্তু এই নতুন আইনের ফলে শুধু গণিকাদের উপর চাপ ও কড়াকড়িই বাড়বে, কিন্তু তাঁদের যারা শোষণ করছে সেইসব গণিকালয়ের মালিক ও দালালদের কোনো অসুবিধা হবে না৷ শুধু আরো কিছু অসহায় তরুণী আরো আইনবহির্ভূত, আরো অ-সুরক্ষিত, আরো অসহায় হয়ে পড়বে বলে দল দুটির আশঙ্কা৷
এসি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)