বিপর্যস্ত ফিলিপাইন্স
১৩ নভেম্বর ২০১৩ফিলিপাইন্সে বিধ্বংসী ঝড় ‘হাইয়ান'-এর দাপটে হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে এখনো স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাচ্ছে না৷ দেশের জাতীয় বিপর্যয় ত্রাণ সংস্থার সূত্র অনুযায়ী বুধবার সকালে মৃতের সংখ্যা ২,২৭৫ ছাড়িয়ে গেছে৷ আহতের সংখ্যা ৩,৬৬৫-রও বেশি৷ অন্যান্য সূত্রে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে৷ জাতিসংঘের অনুমান, শুধু টাকলোবানেই ১০,০০০-এরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে৷ লেইটে ও সামার প্রদেশই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
দ্বীপরাষ্ট্র ফিলিপাইন্সে বিপর্যয়ের পর অবকাঠামো এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, ত্রাণকাজে পদে-পদে সমস্যা দেখা যাচ্ছে৷ সেই সঙ্গে চলছে অরাজকতা৷ টাকলোবান শহরের কাছে উন্মত্ত জনতা একটি গুদাম থেকে চাল লুট করার চেষ্টা করছিল৷ মানুষের চাপে একটি দেয়াল ভেঙে গেলে কমপক্ষে ৮ জন প্রাণ হারিয়েছে৷ পুলিশ ও নিরাপত্তা রক্ষীরা গুদাম পাহারা দিলেও এত সংখ্যক মানুষকে আটকানো সম্ভব হয় নি৷ প্রায় ৫০ কিলো ওজনের কমপক্ষে ১২৯,০০০ চালের বস্তা লুট করা হয় বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে৷
গোটা বিশ্ব থেকে ফিলিপাইন্সে ত্রাণ এসে পৌঁছচ্ছে৷ কিন্তু সেনাবাহিনী মোতায়েন করেও কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে দ্রুত সাহায্য পৌঁছাতে পারছে না৷ ফলে ক্ষোভ বাড়ছে৷ প্রেসিডেন্ট বেনিগনো অ্যাকুইনো গোটা দেশে জরুরি বিপর্যয় পরিস্থিতি ঘোষণা করা সত্ত্বেও সমস্যা রয়ে গেছে৷ আন্তর্জাতিক দাতারা এখনো পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি ডলারের সাহায্যের অঙ্গীকার করেছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রথমে ৩০ লক্ষ ইউরো পাঠিয়েছিল৷ পুনর্বাসনের জন্য আরও ১ কোটি ইউরো পাঠানো হচ্ছে৷ জার্মানির সাহায্যের অঙ্কও বেড়ে চলেছে৷ জার্মান সরকার ১০ লক্ষ ইউরো সাহায্যের ঘোষণা করেছে৷
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানুষ নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে৷ সাধারণ মানুষের অনাহার, রোগের প্রকোপ থেকে শুরু করে ত্রাণ কর্মীদের অবসাদের মতো অনেক ঘটনার কথা জানা যাচ্ছে৷ সরকার তাদের সমস্যার প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছে না বলেও সমালোচনা শোনা যাচ্ছে৷ অনেক মানুষ নিজেদের ভাঙা বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে প্রস্তুত নয়৷ অনেকের অন্য কোনো আশ্রয় নেই, বাকিরা নিজেদের ভিটেমাটি আগলে রাখতে চায়৷ ক্ষতিগ্রস্ত পথঘাট মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলির সঙ্গে বিমান যোগাযোগও ধীরে ধীরে আবার চালু হচ্ছে৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ,এএফপি)