৭২ ঘণ্টার হরতাল!
৮ নভেম্বর ২০১৩
গত দুই সপ্তাহ বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী ১৮ দলীয় জোট দু'দফায় টানা ৬০ ঘণ্টার হরতাল পালন করে৷ এই দু'দফা হারতালে মোট ১৮ জন নিহত হন, আহতও হন অনেকে৷ ঢাকাসহ সারা দেশে হরতালের কারণে এখন ককটেল আর বোমার আতঙ্কে সাধারণ মানুষ৷ হরতালে জরুরি কাজে ঘরের বাইরে বের হলেও, তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাফেরা করেন৷
এ অবস্থায় বিএনপি আন্দোলনকে আরো তীব্র করতে চলেছে৷ এবারও আন্দোলনের হাতিয়ার হিসেবে হরতালকেই সহজ এবং মোক্ষম হিসেবে বেছে নিচ্ছে তারা৷ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জোটের মহাসচিবদের সঙ্গে বৈঠকের পর, শুক্রবার বিকেলে, আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন৷ রবিবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টার এই হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি৷
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, দাবি আদায়ে প্রয়োজনে গণকারফিউয়ের মতো কর্মসূচি দেয়া হবে৷ তিনি বলেন, একতরফা কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না৷ এছাড়া, কোনো দলীয় বা সর্বদলীয় সরকারের অধীনেও হবে না নির্বাচন৷ নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে৷ আর সে দাবি আদায়ের জন্য হরতাল, অবরোধ, ঘেরাও, এমনকি গণকারফিউ কর্মসূচিও দেয়া হতে পারে৷
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতা কাজী জাফরউল্লাহ বলেছেন, দেশে এখন নির্বাচনি বাতাস বইতে শুরু করেছে৷ জাতি এখন একটি নির্বাচন দেখতে চায়৷ তাই তিনি বিরোধী দলকে হরতাল অবরোধ বাদ দিয়ে আলোচনায় এসে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান৷ বলেন, বিরোধী দল সংসদে গিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে যাতে আলোচনা করতে পারে সেজন্যই সংসদ অধিবেশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে৷
তবে দুই দলের নেতারা যা-ই বলুন না কেন, সাধারণ মানুষের জীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে আসছে৷ হরতালের কারণে পচনশীল ভোগ্যপণ্যের দাম যাচ্ছে বেড়ে৷ কমে যাচ্ছে শ্রমজীবী মানুষের আয়৷ ৭২ ঘণ্টা হরতাল ঘোষণার পর, কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আহসান উল্লাহ ডয়চে ভেলেকে জানান, গত দুই সপ্তাহ তিনি ব্যবসা করতে পারেননি৷ এরপর সামনের সপ্তাহে হরতাল হলে তাঁর ব্যবসা লাটে উঠবে৷ নিউ মার্কেট এলাকার দিনমজুর রফিকুল ইসলাম জানান, হরতালে কোনো কাজ থাকে না, ধার করে চলতে হয়৷ কিন্তু এভাবে হরতাল হলে ধার দেয়ার লোকও যে থাকবে না৷