1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ট্রাম্পের সমালোচনায় ওবামা

১১ মে ২০২০

করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় ডনাল্ড ট্রাম্প 'ব্যর্থ' বলে অভিযোগ করলেন অ্যামেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। 

https://p.dw.com/p/3c0cQ

এ বার আসরে নামলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প কার্যত 'ব্যর্থ' বলে দাবি করলেন তিনি। ওবামার কথায়, দেশ জুড়ে 'কেওটিক ডিজাস্টার' বা 'বিশৃঙ্খল বিপর্যয়' তৈরি হয়েছে। যার দায় ডনাল্ড ট্রাম্পকে নিতে হবে। এ দিকে, বিশ্ব জুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪১ লাখ ৮০ হাজার।

দেশ জুড়ে যে ভাবে করোনা ছড়িয়েছে তার জন্য সরাসরি ট্রাম্প প্রশাসনকে দায়ী করেছেন ওবামা। তাঁর বক্তব্য, দেশে সব চেয়ে ভালো সরকার ক্ষমতায় থাকলেও মহামারি হয়তো রোখা যেত না। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারতো। কিন্তু ডনাল্ড ট্রাম্পের সরকার যে ভাবে এই মহামারির মোকাবিলা করছে, তা বিশৃঙ্খল, অরাজক। একেই 'কেওটিক ডিজাস্টার' বলে বর্ণনা করেছেন ওবামা। তাঁর মতে, ট্রাম্প সরকার কেবল নিজের কথা ভাবে। যে কোনও পরিস্থিতিতে নিজের লাভ খোঁজে। করোনা পরিস্থিতিতেও সেই একই ঘটনা ঘটছে।

ওবামার এই আক্রমণের পরেই জবাব দিয়েছে হোয়াইট হাউস। বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ডনাল্ড ট্রাম্প যে ভাবে করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করছেন তা 'অতুলনীয়'। ট্রাম্প দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পেরেছেন বলে এই ভয়াবহ সময়ে বহু নাগিরক প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন।

এ দিকে অ্যামেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে নিয়েও রোববার দিনভর সে দেশের সংবাদমাধ্যমে নানা খবর প্রচারিত হয়। ভাইস প্রেসিডেন্টের এক সহকর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে পেন্সও আইসোলেশনে চলে গিয়েছিলেন। তাঁর করোনা পরীক্ষাও হয়। রোববার রাতে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, পেন্সের রিপোর্ট নেগেটিভ। অর্থাৎ, তাঁর করোনা হয়নি। ফলে আপাতত তিনি আইসোলেশনে থাকছেন না। সোমবার অফিসেও যাবেন।

সোমবার সকাল পর্যন্ত অ্যামেরিকায় করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ লাখ ৬৭ হাজার জন। মৃত্যু হয়েছে ৮০ হাজার ৭৮৭ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন দুই লাখ ৫৬ হাজার জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গোটা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৪১ লাখ ৮০ হাজার। মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৮৩ হাজার ৮৬০ জনের। সুস্থ হয়েছেন ১৪ লাখ ৯০ হাজার মানুষ।

ইউরোপে করোনার সংক্রমণ আগের চেয়ে অনেকটা কমলেও একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। জার্মানি লকডাউনের কড়াকড়ি সামান্য কমাতেই সেখানে সংক্রমণ ফের লাফিয়ে বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন তোলা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। লকডাউন তুললে সংক্রমণ বাড়ার প্রভূত সম্ভাবনা। আবার লকডাউন না তুললে অর্থনীতি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন খুব সতর্কভাবে লকডাউন তোলার ইঙ্গিত দিয়েছেন। বাড়ি থেকে যাঁদের পক্ষে করা সম্ভব নয়, তাঁদের অফিসে গিয়ে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। বাইরে গিয়ে ব্যায়াম করার ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি তোলা হবে।

অস্ট্রেলিয়ায় এর মধ্যেই লকডাউনের কড়াকড়ি অনেক কমানো হয়েছে। প্রতিবেশীর বাড়িতে যাওয়ারও অনুমতি মিলেছে। স্কুল খোলা হয়েছে বেশ কিছু জায়গায়। তবে ছাত্র সংখ্যা কমিয়ে স্কুল চালু হয়েছে। ভাগ ভাগ করে একেক দিন একেকটি দলকে পড়ানো হচ্ছে। কড়াকড়ি কমলেও জার্মানির মতো অস্ট্রেলিয়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যায়নি।

এ দিকে রমজান উপলক্ষে আরবের রাজা দেশের মানুষের মধ্যে ৪৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী কিছু দিনের মধ্যেই সেই টাকা নাগরিকদের হাতে পৌঁছে যাবে বলে দেশের সরকারি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অবশ্য জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ এখনও কাটেনি। বিশেষ করে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে যে ভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তা যথেষ্ট আশঙ্কার বলেই তারা মনে করছে। রোববার ঘানার প্রেসিডেন্ট বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশেও সংক্রমণের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। এরই মধ্যে চীনের উহানে নতুন করে করোনা আক্রান্ত মিলেছে। এই উহান থেকেই করোনা ছড়িয়ে পড়েছিল প্রথম।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)