দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্নার জয়যাত্রা
১৯ আগস্ট ২০১১ভারতীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টা৷ তিন রাত জেলে কাটিয়ে দুর্নীতি বিরোধী সংগ্রামী নেতা আন্না হাজারে আজ যখন জেল থেকে বেরিয়ে এলেন, তখন বৃষ্টি উপেক্ষা করে জেলের সামনে অপেক্ষা করছিল হাজার হাজার সমর্থক৷ সেখান থেকে মিছিল করে আন্না এগিয়ে চললেন ১৪ কিলোমিটার দূরে তাঁর নতুন অনশন মঞ্চ রামলীলা ময়দানের দিকে৷ পথে যাত্রা বিরতি করে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থলে৷ তবে স্বস্তির বিষয়, এত বড় জন সমাগমে কোনরকম শান্তি ভঙ্গ হয়নি৷ পুলিশের আচরণও খুব সংযত৷
আন্নার জনসমর্থন দেখে সরকার সংঘাতের পথে যাবার কোন ঝুঁকি নিচ্ছে না৷ বরং মাঝামাঝি একটা রফাসূত্র বের করতে তলে তলে চেষ্টা চালাচ্ছে৷ এনজিওগুলির সাহায্য নিচ্ছে৷ অন্যদিকে প্রাইভেট মেম্বারের মাধ্যমে আন্নার জন লোকপাল বিলটি সংসদে এনে তা নিয়ে আলোচনা করার বিষয় চিন্তাভাবনা করছে৷ সেক্ষেত্রে আন্নার জন লোকপাল বিলটি সংসদের স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠানো হবে এবং স্থায়ী কমিটি সরকারের আনা লোকপাল বিলে সংশোধন করতে পারেন৷ যেমন, প্রধানমন্ত্রীকে বিলের আওতায় আনা৷ বিচার বিভাগকে আনার বিষয়টি পরে বিবেচনা করা যেতে পারে৷ আন্নার নাগরিক কমিটির অন্যতম সদস্য বিচারপতি সন্তোষ হেগড়ে এবিষয়ে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন৷
পাশাপাশি সরকার অন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে বোঝাবার চেষ্টা করছে, আন্না সংসদের ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করছেন৷ নিজের দাবি মেনে নিতে সংসদের ওপর অসাংবিধানিকভাবে চাপ সৃষ্টি করছে৷ এটা হলে ভবিষ্যতে যে-কেউ যে-কোন দাবিতে সরকারকে ব্ল্যাকমেল করতে পারে৷ এই ক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দলের এক রায় তা হতে পারেনা৷
আন্নাকে ১৫ দিনের অনশনের অনুমতি দেয়া হয়৷ তারপর তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা দেখে তা বাড়ানো হতে পারে৷ তবে পুলিশ আন্না সঙ্গীদের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করেছে যে, আন্নার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারবে পুলিশ৷ অনেকে মনে করছেন, ১৫ দিনের মধ্যেই একটা ফয়সালা হয়ে যাবে৷ ৭৪ বছর বয়সী আন্না এর বেশি ধকল সহ্য করতে পারবেন না৷ তবে সরকার সতর্ক পদক্ষেপ ফেলতে চাইছে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন