জঙ্গিদের নাগরিকত্ব বাতিল করবে জার্মানি
৩ এপ্রিল ২০১৯‘‘যারা বিদেশে গেছে এবং সন্ত্রাসী জঙ্গি গোষ্ঠীর হয়ে সশস্ত্র যুদ্ধে অংশ নিয়েছে তারা জার্মানি এবং তার মূল্যবোধকেও বিসর্জন দিয়েছে৷ সন্ত্রাসী জঙ্গি কাঠামোয় তারা বিদেশি শক্তির সঙ্গে যুক্ত,'' বলে এক বিবৃতিতে এমন অভিমত দিয়েছে দেশটির সরকার৷
প্রাপ্তবয়স্ক ও আরো একটি নাগরিকত্ব রয়েছে এমন সন্ত্রাসী জঙ্গিদের ক্ষেত্রেই আইনটি প্রযোজ্য হবে৷ সংখ্যালঘুদের উপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না৷ অতীতের ঘটনার ক্ষেত্রেও এটি অকার্যকর হবে৷
বর্তমানে ইরাকে মার্কিন সমর্থনপুষ্ট সিরীয় কুর্দি বাহিনী ও সরকারের হাতে আইএস-এ যোগ দেয়া অনেক জার্মান নাগরিক আটক রয়েছে৷ তাদের নাগরিকত্ব বাতিল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই৷ যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র সিরীয় কুর্দি বাহিনী আটককৃত কয়েক হাজার আইএস যোদ্ধাদের ফেরত নিতে বিভিন্ন দেশের উপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে৷ এসব বিদেশি যোদ্ধাদের বিষয়ে কী ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হবে, তা নিয়ে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বিতর্ক রয়েছে৷
জার্মান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ২০০৩ সাল থেকে দেশটির প্রায় ১,০০০ নাগরিক সিরিয়া ও ইরাকের জিহাদি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দিয়েছে৷ তাদের এক তৃতীয়াংশ এরইমধ্যে জার্মানিতে ফিরে এসেছে৷ যাদের অনেককে বিচার অথবা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হয়েছে৷ বিলটি শুধু আইএস এর জন্য নয়, সব সন্ত্রাসী জঙ্গিদের জন্যই প্রযোজ্য হবে বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র৷
‘‘আইন অনুযায়ী একটি সন্ত্রাসী জঙ্গি সংগঠন আধা সামরিক সশস্ত্র সংগঠন হিসেবে বিবেচিত হবে, যারা আন্তর্জাতিক আইনের বরখেলাপ ও নতুন রাষ্ট্রকাঠামো প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি বিদেশি রাষ্ট্রের বিদ্যমান কাঠামো নির্মূল করার পরিকল্পনা করেছে,'' জানান এই মুখপাত্র৷ সে অনুযায়ী তুরস্কের সরকারের বিরুদ্ধে তিন যুগ ধরে লড়াইরত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টিতে যোগ দেয়া জার্মান দ্বৈত নাগরিকরাও তাদের নাগরিকত্ব হারাবে৷ বিশ্বের প্রবাসী কুর্দি জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় অংশটিই জার্মানিতে বসবাস করে আসছে, যাদের অনেকেই কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির সাথে যুক্ত৷
গত বছর জার্মানির ক্ষমতাসীন জোট সরকারের রাজনৈতিক দলগুলো নাগরিকত্ব আইন সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয়৷ কিন্তু বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রীর মতদ্বন্দের কারণে এর অনুমোদনের প্রক্রিয়া ধীরগতিতে এগোয়৷ এই দেরি নিয়ে সরকারের সমালোচনাও হয়৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আশা নতুন আইন ভবিষ্যতের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে৷
প্রতিবেদন: চেজ ভিন্টার/এফএস