‘‘দ্য লেডি ইজ এ ট্র্যাম্প’’
২২ নভেম্বর ২০১১মজার কথা, টোনি বেনেট সম্পর্কে যেমন লিভিং ক্ল্যাসিক ছাড়া আর কিছু বলা চলে না, ‘‘দ্য লেডি ইজ এ ট্র্যাম্প'' গানটি সম্পর্কেও তাই৷ ১৯৩৭ সালের রজার্স এ্যান্ড হার্ট'এর মিউজিকাল ‘বেব্স ইন আর্মস'এর গান৷ পরে ফ্র্যাঙ্ক সিনাত্রা, এলা ফিটজেরাল্ড, শার্লি বেসি, স্যামি ডেভিস জুনিয়র, অনেক বড় বড় শিল্পী গানটি ‘কভার' করেছেন, অর্থাৎ নিজেদের মতো করে গেয়েছেন৷
টোনি বেনেট এবার যখন তাঁর ৮৫তম জন্মদিন উপলক্ষে একটি দ্বিতীয় ডুয়েট গানের এ্যালবাম বার করলেন, তখন তার গোড়াতেই থাকল পপ সংগীত জগতের বর্তমান সম্রাজ্ঞী লেডি গাগা'র সঙ্গে ডুয়েট৷ এবং সেটা দ্য লেডি ইজ এ ট্র্যাম্প না হয়ে অন্য কিছু হলেই আশ্চর্য হতো৷ কেননা গানটি সূচনায় লেখা হয়েছিল নিউ ইয়র্ক হাই-সোসাইটির আদবকায়দা, কেতা ইত্যাদিকে ঠাট্টা করে৷ এবং লেডি গাগা তো কি মনোরঞ্জন, কি ফ্যাশনের জগতে মূর্তিমতী বিপ্লব৷ তিনি কোনো রীতিনীতিরই ধার ধারেন না৷
আশ্চর্য এই, লেডি গাগা আদৌ গান গাইতে পারেন কিনা, বলে যে নিন্দুকরা নাক সিঁটকোতেন, তাদের কিন্তু এবার মুখ চুপ এবং চুন৷ টোনি বেনেটের পাশে যে কণ্ঠটি শোনা গেছে ঐ ডুয়েটে, তা এমনই সাবলীল, স্বচ্ছন্দ, বলিষ্ঠ, সপ্রতিভ এবং পরিশীলিত এক জ্যাজ কণ্ঠ, যে লেডি গাগা'কে অবলীলাক্রমে খানদানি জ্যাজ গায়িকা বলে চালিয়ে দেওয়া যায়! হাজার হোক, স্টেফানি জোয়ান্নে আঞ্জেলিনা গের্মানট্টা তো ঐ নিউ ইয়র্কেই জন্মেছেন, বড় হয়েছেন, এমনকি আর্ট স্কুলেও গেছেন - অন্তত কিছুদিনের জন্য৷
লেডি গাগা'কে গ্ল্যাম রক'এর প্রতিনিধি, ফ্যাশন আইকন, সমকামীদের প্রবক্তা, মাইকেল জ্যাকসনের পরে বিশ্বের সেরা এবং সবচেয়ে চমকপ্রদ স্টেজ'শো'গুলির স্রষ্টা ইত্যাদি বহু রূপে দেখা এবং দেখানো হয়ে থাকে৷ সারা বিশ্বে এ্যালবাম বেচায় এবং গ্র্যামি কি এমটিভি এ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় তাঁর জুড়ি নেই৷ লেডি গাগা'র টেলিভিশন সাক্ষাৎকার দেখলে বোঝা যায়, একটি ক্ষিপ্র মন কাজ করছে এই বাহারে বহিরাবরণটির অন্তরালে৷
কিন্তু সব কিছুর উৎসমুখে ছিল এবং আছে সংগীত৷ আবার লেডি গাগা'র ক্যারিয়ার'টা যে ভবিষ্যতে কোন পথে যেতে পারে, অথবা যাবার ক্ষমতা রাখে, তারই একটা নমুনা দিলেন যেন এই ২৫ বছর বয়সের শিল্পী:
‘‘ডিনার আটটায়, কিন্তু তার আগেই খিদে পায়৷
থিয়েটার ভালোবাসে, কিন্তু দেরি করে আসা নয়৷
যাদের ওপর খ্যাপা, তাদের নিয়ে ক্কচিৎ মাথা ঘামায়৷
সেই জন্যেই এই মহিলা আদৌ সভ্য-ভব্য নয়৷''
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আবদুল্লা আল-ফারূক