ধর্ষিতাকেই সাজা দিল কাতার
১৪ জুন ২০১৬২২ বছর বয়সি লাউরা নেদারল্যান্ডসের নাগরিক৷ ছুটিতে তিনি কাতারে গিয়েছিলেন বেড়াতে৷ সেখানেই এক হোটেলে এক সন্ধ্যায় নাচছিলেন৷ নাচের ফাঁকে সামান্য মদ্যপানও করেছিলেন৷ কিন্তু যে পরিমাণ মদ্যপানে কোনো সমস্যাই হওয়ার কথা নয়, সেই পরিমাণ পান করার পরই অচেতন হয়ে যান লাউরা৷ পরের দিন সকালে নিজেকে আবিষ্কার করেন অচেনা এক ঘরে, বুঝতে পারেন তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে৷
লাউরার অভিযোগ, তাঁকে মদের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে৷ যার রুমে তাঁকে নেয়া হয়েছিল তার নাম ওমর আব্দুল্লাহ আল-হাসান৷ তার বিরুদ্ধেই ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন লাউরা৷ কিন্তু সিরীয় নাগরিক ওমরের দাবি, সেই রাতে যৌনমিলন লাউরার সম্মতিতেই হয়েছে৷ যৌনমিলনের জন্য লাউরা তার কাছে টাকা চেয়েছিলেন বলেও দাবি করেছেন ওমর৷
এদিকে কাতারের আদালত ওমরকে অবৈধ যৌনমিলনের অভিযোগে ১০০ বার বেত্রাঘাত এবং মদ্যপানের অভিযোগে ৪০ বার বেত্রাঘাতের শাস্তি ঘোষণা করেছে৷ আদালতের আদেশে আরো বলা হয়েছে, বত্রাঘাতের ধকল সহ্য করার স্বাস্থ্যগত সামর্থ আছে কিনা – তা পরীক্ষা করেই ওমরের শাস্তি কার্যকর করা হবে৷ তারপর তাকে সিরিয়ায় ফেরত পাঠানো হবে৷
পাশাপাশি লাউরার বিরুদ্ধেও শাস্তি ঘোষণা করেছে কাতারের আদালত৷ গত ১৪ মার্চ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ পরে ব্যভিচারের অভিযোগে তাঁকে ৩ হাজার কাতারি রিয়াল (৭১০ ইউরো) জরিমানা করে কাতারের আদালত৷ আদেশে আরো বলা হয়, একই ‘অপরাধ' আবার করলে লাউরাকে এক বছর কারাভোগ করতে হবে৷ অবশ্য লাউরা এখন মুক্ত৷ জরিমানার টাকা পরিশোধ করলেই নিজের দেশে ফিরতে পারবেন তিনি৷
লাউরাকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই হ্যাশট্যাগফ্রিলরা (#FreeLaura)-র মাধ্যমে প্রতিবাদ এবং তাঁর মুক্তির দাবি ওঠে৷ ধর্ষণের উপযুক্ত শাস্তি না দিয়ে ধর্ষিতাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর অদ্ভুত আইনের সমালোচনা করেছেন অনেকেই৷
তবে অবশেষে যে তিনি নিজের দেশ নেদারল্যান্ডসে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন সে কারণে আপাতত স্বস্তিও প্রকাশ করছেন কেউ কেউ৷
এসিবি/ডিজি (এএফপি)