পলাতকদের অবস্থান অজানা
১৫ আগস্ট ২০১৪বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ড পাওয়া ৬ পলাতক আসামি হলেন: লে. কর্নেল খন্দকার আব্দুর রশিদ, লে. কর্নেল শরিফুল হক ডালিম, লে. কর্নেল নূর চৌধুরী, লে. কর্নেল এম রাশেদ চৌধুরী, ক্যাপ্টেন আব্দুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন৷
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ‘‘আমরা এখনো এই ছয়জনের নিশ্চিত অবস্থান জানি না৷ তবে দু'জন অ্যামেরিকা ও ক্যানাডায় আছেন বলে জানা গেছে৷''
পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (অপারেশন) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ‘‘লে. কর্নেল নূর চৌধুরী ক্যানাডায় এবং লে. কর্নেল এম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত৷ কিন্তু বাকি চারজনের অবস্থান সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত নই৷''
এদিকে সংশ্লিষ্ট নানা সূত্রে জানা গেছে, পলাতক ছয় জন বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাজ্য, ক্যানাডা, থাইল্যান্ড, লিবিয়া, পাকিস্তান, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ইতালি, লিবিয়া, চায়না, হংকং, কেনিয়া ও ভারতে অবস্থান করেছেন৷
লে. কর্নেল এম রাশেদ চৌধুরী থাইল্যান্ড, লিবিয়া এবং ক্যানাডায় অবস্থান করেছেন৷ আর লে. কর্নেল নূর চৌধুরী ক্যানাডা, পাকিস্তান ও সৌদি আরবে বিভিন্ন সময় অবস্থান করেছে বলে বাংলাদেশের কাছে তথ্য আছে৷
রিসালদার মোসলেমউদ্দিন এখন পাকিস্তানে আছেন বলে ধারাণা করা হচ্ছে৷ তবে এর আগে তিনি ভারতে ছিলেন বলে বাংলাদেশ সরকার ভারতকে জানিয়েছিল৷
খন্দকার আবদুর রশিদ অবস্থান করেন মূলত লিবিয়ার বেনগাজি শহর ও পাকিস্তানে৷ আর শরিফুল হক ডালিমের ব্যবসাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড কেনিয়াকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হলেও তিনি মাঝেমধ্যে লিবিয়া ও ইউরোপে যান৷ তিনি একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তৎপরতা চালাচ্ছেন৷
আরেক পলাতক আসামি আজিজ পাশা ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের হারারেতে মারা যান৷
২০০৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মোট ১২ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন৷ তাদের মধ্যে আটক পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড ঐ বছরই কার্যকর হয়৷ আর বাকিরা পলাতক থাকায় তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যায়নি৷
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, ‘‘সরকার কূটনৈতিকভাবে জোর তৎপরতা চলাচ্ছে তাদের অবস্থান চিহ্নিত করে ফেরত আনতে৷ কিন্তু কিছু দেশ আইনি বাধার কথা বলছে৷''
গত সপ্তাহে ঢাকায় ক্যানাডার রাষ্ট্রদূত হিদার ক্রুডেন বলেন, ‘‘পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ শেখ মুজিব হত্যা একটি জঘন্য কাজ৷'' কিন্তু নূর চৌধুরীকে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি৷
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের ফেরত আনতে সরকারের একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে৷ টাস্কফোর্সের প্রধান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘‘টাস্কফোর্স শিগগিরই বসবে৷ সরকার খুনিদের ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট আন্তরিক৷ তবে ক্যানাডায় পালিয়ে থাকা খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরত চাওয়া হলে ক্যানাডার সরকার জানিয়েছে, তারা তাদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে৷ এ ছাড়া খুনিদের ফিরিয়ে আনার সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার প্রসঙ্গটিও গুরুত্বপূর্ণ৷ এ জন্য অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে৷''