আবার রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা
৮ আগস্ট ২০১৪বৃহস্পতিবার রাশিয়ার সরকার পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশ থেকে কয়েকটি খাদ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে৷ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন বিদেশি নিষেধাজ্ঞার পালটা পদক্ষেপ হিসেবে সরকারকে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ তারপর প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ এই ঘোষণা করেন৷
এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আগামী এক বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশ, নরওয়ে, ক্যানাডা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে মাছ, মাংস, দুগ্ধজাত পণ্য, ফল ও তরিতরকারি রাশিয়ায় প্রবেশ করবে না৷ উল্লেখ্য, গত বছর রাশিয়ার খাদ্য আমদানির অঙ্ক ছিল প্রায় ৪,৩০০ কোটি ডলার৷ রাশিয়ার সাধারণ মানুষ যাতে এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে দিকেও নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন পুটিন৷ কৃষিমন্ত্রী নিকোলাই ফিয়োদরভ স্বীকার করেন যে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে স্বল্পমেয়াদি ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি দেখা যেতে পারে, তবে তারপর বিপদ কেটে যাবে৷ তাছাড়া ব্রাজিল ও নিউজিল্যান্ডের মতো দেশ থেকে মাংস আমদানি করে ঘাটতিও অনেকটা মেটানো যাবে৷
নেদারল্যান্ডস সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু দেশ এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ক্ষতির মুখ দেখবে৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার এই পদক্ষেপের ফলে শেষ পর্যন্ত রুশ ক্রেতাদেরই ক্ষতি হবে৷ কারণ বর্তমান অস্থিরতার ফলে রুবলের বিনিময় মূল্য কমে যাচ্ছে৷ দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে৷ নিষেধাজ্ঞার ফলে অনেক পণ্যের সরবরাহ কমে যাচ্ছে৷ দেশ থেকে মূলধন চলে যাওয়ায় অর্থনীতি সামগ্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ তবে পশ্চিমা দেশ থেকে যে সব দামি খাদ্য আমদানি বন্ধ হচ্ছে, তার একটা বড় অংশ এতকাল মূলত উচ্চবিত্তদেরই নাগালে ছিল৷
পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে মস্কো পশ্চিমা দেশগুলির বিমান সংস্থাগুলির কাছ থেকে রাশিয়ার আকাশসীমা ব্যবহারের অধিকার কেড়ে নিতে পারে৷ তখন তাদের বিকল্প পথ খুঁজতে হবে৷ কিন্তু সে ক্ষেত্রে রাশিয়ারও আর্থিক ক্ষতি হবে৷ বৃহস্পতিবারই রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়া এনএসএ কনট্র্যাক্টর এডোয়ার্ড স্নোডেন তিন বছরের ভিসা পেয়েছেন৷ ২০১৮ সালে তিনি রুশ নাগরিকত্বের জন্যও আবেদন করতে পারেন৷ এর মাধ্যমে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা পাঠাতে চেয়েছে মস্কো৷
এদিকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে যেখানে মালয়েশীয় বিমান বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেখানে নেদারল্যান্ডস-এর তদন্ত দল তাদের কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে৷ সেনাবাহিনী ও রুশপন্থি বিদ্রোহীদের সংঘর্ষের ফলে সেখানকার পরিস্থিতি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে তাঁরা মনে করেন৷ এই সিদ্ধান্তের কথা জেনে ইউক্রেনের সরকার বলেছে, সে ক্ষেত্রে তারাও ওই অঞ্চলে আর যুদ্ধবিরতি মেনে চলবে না৷
ইউক্রেনের জন্য পশ্চিমা বিশ্বের সামরিক সহায়তার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা চলছে৷ বৃহস্পতিবার ন্যাটোর মহাসচিব আন্ডার্স ফগ রাসমুসেন ও ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী আর্সেনি ইয়াতসেনিয়ুক৷ রাজধানী কিয়েভে প্রস্তাবিত ‘ন্যাটো ট্রাস্ট ফান্ড' নিয়ে কথা বলেন৷ এখনই সরাসরি অস্ত্র সরবরাহ করার কথা হচ্ছে না৷ তবে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর কমান্ড ও কনট্রোল, যোগাযোগ ব্যবস্থা, সাইবার প্রতিরক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ন্যাটো সহায়তা করতে পারে৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, এফপি, এপি)