পুসি রায়ট
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩পুসি রায়ট ব্যান্ডের ২৩ বছর বয়সি সদস্য তলোকনিকোভার লেখা একটি চিঠি গণমাধ্যমে হইচই ফেলে দিয়েছে৷ সোমবার প্রকাশিত তাঁর ঐ চিঠিতে রাশিয়ার কারাগারের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে৷ রাশিয়ার কেন্দ্রে অবস্থিত মরদোভিয়ার ১৪ নম্বর পেনাল লেবার কলোনিতে কিভাবে নারী কারাবন্দিদের ১৬ থেকে ১৭ ঘণ্টা অমানুষিক পরিশ্রম করতে বাধ্য করা হয় সেকথা লিখেছেন তিনি৷ লিখেছেন তাদের যেমন হয়রানি করা হয়, তেমনি ঘুমের জন্য দেয়া হয় মাত্র ৪ ঘণ্টা সময়৷ অন্য কারাগারে স্থানান্তর না করা পর্যন্ত তলোকনিকোভা আর কোনো খাবার গ্রহণ করবেন না এবং কারাগারের কাজ বন্ধ রাখবেন বলে জানিয়েছেন৷
তিনি তাঁর চিঠিতে জানিয়েছেন, কারাগারের উপ-পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কুপ্রিয়ানোভ, যিনি নিজেকে স্ট্যালিনের অনুসারী বলে উল্লেখ করতে ভালোবাসেন, তিনি তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন৷ কর্ম পরিবেশ নিয়ে ঐ কর্নেলকে অভিযোগ করার পরই তাঁকে এ হুমকি দেয়া হয় বলে জানালেন তলোকনিকোভা৷ এমনকি অন্যান্য বন্দিরাও তাঁকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি৷
এর আগে বেশ কয়েকবার কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেও এবারই প্রথম তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানিয়েছেন তলোকনিকোভা৷ বলেছেন, কুপ্রিয়ানোভের বিরুদ্ধে যাতে অভিযোগ গঠন করা হয়৷
চিঠিতে আইনজীবী, স্থানীয় কারার কর্তৃপক্ষ এবং ক্রেমলিনের মানবাধিকার প্রতিনিধিদের সম্বোধন করা হয়েছে৷ চিঠিতে দাবি জানানো হয়েছে, দাসদের মতো ব্যবহার না করে যাতে তাদের সাথে সাধারণ মানুষের মতো ব্যবহার করা হয়৷ এতে আরো বলা হয়েছে, প্রায়ই তাদের মারধর করা হয় এবং খাবার ও পানি দেয়া হয় না৷ কখনো কখনো তাদের টয়লেট ব্যবহার করতে দেয়া হয়না৷ এমনকি বিনা পোশাকে অর্থাৎ নগ্ন হয়ে কাজ করতে বাধ্য করা হয়৷
তবে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁর এসব অভিযোগ নাকচ করে বলেছেন, তলোকনিকোভা যে কারাগারে আছেন তার পরিবেশ খুবই চমৎকার এবং তাঁকে সেখানে মাত্র ৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়৷
ধর্মীয় বিদ্বেষ দ্বারা উদ্বুদ্ধ গুণ্ডামির অভিযোগে পুসি রায়ট'এর তিন সদস্য মারিয়া আলিওখিনা, নাদেজদা তলোকনিকোভা ও ইয়েকতারিনা সামুটসেভিচকে গত বছর দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত৷ অভিযুক্তরা ২০১২ এর ফেব্রুয়ারি মাসে মস্কোর একটি গির্জায় প্রবেশ করে ভ্লাদিমির পুটিনের বিরুদ্ধে গান গেয়েছিলেন৷ তাদের সেই গান সেসময় পুসি রায়ট'এর এক সদস্য ভিডিও করেন এবং পরবর্তীতে সেটি সম্পাদনা করে প্রকাশ করা হয়৷
এপিবি/জেডএইচ (এএফপি)