সাইপ্রাসে ‘‘ব্যাংক রান’’-এর ভীতি
২২ মার্চ ২০১৩সেদিন রাতেই এটিএম'গুলোর সামনে লম্বা লাইন পড়ে৷ এক একটা গোটা পরিবার একসঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়েছে৷ সবারই ভয়, ব্যাংক দেউলিয়া হবে৷ কাজেই সিপ্রিয়টদের প্রচেষ্টা হল, নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে যতটা পারো টাকা তুলে নাও৷ আর কয়েকদিনের মধ্যে সাইপ্রাসের ব্যাংকগুলিকে বেশ কয়েক বিলিয়ন দেওয়ার মতো কাউকে যদি না পাওয়া যায়, তবে খুদে দ্বীপরাষ্ট্রটির দেউলিয়া হওয়া অবধারিত৷
আগামী মঙ্গলবার অবধি ব্যাংক থেকে সরাসরি টাকা তোলার, এমনকি ট্রান্সফার করার কোনো উপায় নেই, যদিও এটিএম থেকে দিনে ৪০০ ইউরো, পরে কমিয়ে ৩৫০ ইউরো তোলার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ যার অর্থ, মঙ্গলবার ব্যাংক খোলার পর হাজার হাজার মানুষ যা পারেন, যতটা পারেন টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করবেন৷ এ তাঁদের কষ্টার্জিত অর্থ, সারা জীবনের সঞ্চয়৷
নগদ নেই, তাই দোকানপাট বন্ধ
দোকান-বাজার, কলকারখানা-শিল্পসংস্থাগুলির দশাও এক৷ তাদেরও নিজেদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা কি ট্রান্সফার করা সম্ভব নয়৷ বাইরে থেকে আমদানি করা খাদ্যপণ্য বন্দরে পচে নষ্ট হচ্ছে, কেননা পেমেন্ট না হলে তা ছাড়ানো সম্ভব নয়৷ কাজেই দোকানি আর হোটেল-মালিকদের বাইরে রোদ্দুরে বসে তাস খেলা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই – উপায়ও নেই৷
সিপ্রিয়টদের বদ্ধমূল ধারণা, ইউরোপ তাদের বিপদের সময় পরিত্যাগ করেছে৷ ভূমধ্যসাগরে তাদের ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রটি এতই তাৎপর্যবিহীন যে, ইউরোপ তাদের ত্রাণ করার প্রয়োজন বোধ করেনি৷ ১৯৬৪ সালে তুরস্ক যখন সাইপ্রাসে অনুপ্রবেশ করে, তখনও ইউরোপ যে তাদের সাহায্য করেনি, সিপ্রিয়টরা সে কথা ভুলে যায়নি৷ এবারেও নাকি ইউরোপ ইচ্ছা করলেই তাদের সাহায্য করতে পারত৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অধিকাংশ সরকারপ্রধানের মত কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা৷ তারা চান, সাইপ্রাস তার নিজের ত্রাণের জন্য একটা নিজস্ব অবদান রাখুক৷ কে জানে, ছোট থেকে বড় হওয়ার সেটাই শ্রেষ্ঠ পন্থা কিনা৷