‘ডিম হামলা চলবেই'
১৭ জুলাই ২০১৭সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরানো নিয়ে গত ২৮ শে জুন ঢাকার শাহবাগে মশাল মিছিল এবং প্রতিবাদ র্যালি করে গণজাগরণ মঞ্চ৷ ঐ র্যালি থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কটূক্তি করা হয়েছে – এই অভিযোগে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ দু'জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রব্বানী৷ গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার সেই মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিন নেন রবিবার৷ কিন্তু আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হওয়ার পরপই হামলার মুখে পড়েন তিনি৷
ইমরান ডয়চে ভেলের কাছে অভিযোগ করেন, ‘‘আমি গাড়িতে ওঠার সময় আমার ওপর অতর্কিতে হামলা চালানো হয়৷ মামলার বাদী ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়ে হামলা করে৷ এরপর আমাদের কর্মীরা আমাকে উদ্ধার করে আদালতের ভিতরে নিয়ে রাখে৷ সেখানেও মারামারি হয়৷ এমনকি আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী আহতও হয়৷''
তিনি আরো অভিযোগ করেন, ‘‘এর আগেও আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল৷ আমার বিরুদ্ধে মামলা করার পর তারা সমাবেশে বলেছিল, আমাকে যেখানেই পাওয়া যাবে হত্যা করা হবে, কুকুরের মতো জবাই করা হবে৷ তারপরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেোয়া হয়নি৷ তার মানে রাজপথের প্রতিবাদকেও তারা হামলা-মামলা দিয়ে দমন করতে চায়৷ আদালত এলকায়ও আমাদের ওপর হামলা হলো৷ এখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা তো নেই-ই, নাগরিক সুরক্ষাও নেই৷ উপরন্তু মানুষের যাওয়ার জায়গা আদালতেও নিরাপত্তা নেই৷ সেখানেও তারা মানুষের ওপর হামলা করছে৷''
ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘‘আমি আদালত থেকে বের হওয়ার পর তারা আমার ওপর বোমা হামলারও পরিকল্পনা করেছিল৷ এটা তাদের কথায়ই প্রকাশ পেয়েছে৷''
অন্যদিকে ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রব্বানী ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেন, ‘‘ইমরান নাটক করছে৷ তার ওপর কোনো হামলা হয়নি৷ আমাদের ছাত্রলীগের কর্মীরা আদালতের গেটের বাইরে যখন প্রতিবাদ করছিল, তখন তাদের ওপর হামলা হয়৷ পুলিশ এবং ওরা আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা করে৷ হামলা করার পর ইমরানের গাড়িতে কয়েকটি ডিম মারা হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কটূক্তি করার পর মাস দুয়েক আগে আমরা মামলা করি৷ মামলার পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতারা ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে ইমরান মাফ না চাইলে তার ওপর ডিম ছোড়া হবে৷ ঐ ঘেষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ডিম ছোড়ার ঘটনা ঘটতে পারে৷''
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘‘আমি নিজেও সেখানে ছিলাম৷ ডিম ছোড়া ছাড়া কোনো হামলার প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না৷ তবে আমি নিজে ডিম ছুড়িনি৷''
মামলার অভিযোগ সম্পর্কে বলতে গিয়ে ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে মূর্তি সরানোর বিষয়টি ছিল আদালতের বিষয়৷ এটা প্রধানমমন্ত্রীর কোনো বিষয় ছিল না৷ তারপরও ঐ দিন প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করে বলা হয় – ‘ছি ছি হাসিনা লজ্জায় বাঁচিনা, মুক্তিযুদ্ধ হারেনি হেরেছে হাসিনা, বাংলাদেশ হারেনি হেরেছে হাসিনা৷'
তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘ইমরান যতদিন প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা না চাইবে, ততদিন তাকে যেখানেই দেখা যাবে সেখানেই তাকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়া অব্যাহত থাকবে৷ এছাড়া তার ওপর কোনো ধরনের হামলা হবে না৷ একটি ইটও ছোড়া হবে না৷ তাকে ডিম হামলা চালিয়ে অপমান করা হবে যতদিন সে না ক্ষমা চায়৷ বাংলাদেশে ছাত্রলীগের ৪০ লাখ নেতা-কর্মী এটা করবেন৷ এটাই আমাদের প্রতিবাদ৷''