ফুটবলের বাড়ি যাওয়া ঠেকালো ক্রোয়েশিয়া
১১ জুলাই ২০১৮সেই কবে ১৯৬৬ সালে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে জুলে রিমে কাপ জয় করেছিল স্বাগতিক দেশ ইংল্যান্ড৷ ফুটবলের আবিষ্কারক দেশটি এরপর থেকেই যেন খেই হারিয়েছে৷
অর্ধ শতাব্দী পরে হ্যারি কেইনদের পায়ের ছন্দে সেই স্বপ্নে আবার বিভোর হয়েছিল থ্রি লায়ন্স৷ সমর্থকেরা তো বটেই, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এমনকি রাজপরিবারও পূর্ণ সমর্থন নিয়ে ছিল বিশ্বকাপের অপেক্ষায়৷
কিন্তু অন্তত আরো চার বছর ইংল্যান্ডের অপেক্ষা বাড়িয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে গেল ক্রোয়েশিয়া৷
অথচ শুরুটা দিয়েছিল অন্যরকমের ইঙ্গিত৷ খেলার একেবারে শুরুতে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ৫ মিনিটের মাথায় গোল করে বসেন কিরান ট্রিপিয়ার৷
১২ বছর পর কোন ইংলিশ খেলোয়াড় বিশ্বকাপে ফ্রি কিক থেকে সরাসরি গোল পেলেন৷ এর আগে ২০০৬ সালে ইকুয়েডরের বিপক্ষে ফ্রি কিক থেকে ডেভিড ব্যাকহাম গোল করেছিলেন৷
২০ গজ দূর থেকে বাঁকানো শট ক্রোয়াট ডিফেন্ডারদের মাথার ওপর দিয়ে বার ঘেঁষে ঢুকে যায় জালে৷ গোলকিপার ঝাঁপিয়ে পড়েও ঠেকাতে পারেননি সে বল৷
তবে সমতা ফেরাতে মরিয়া ক্রোয়েশিয়া একের পর এক আক্রমণে গেলেও ভাঙতে পারেনি ইংলিশ ডিফেন্সের দেয়াল৷ প্রথমার্ধ শেষ হয় এক গোলে পিছিয়ে থেকেই৷
দ্বিতীয়ার্ধে অপেক্ষার পালা বেশি দীর্ঘ হতে দেননি ইভান পেরিসিচ৷ ৬৮ মিনিটে ডিবক্সের ভেতরে ভারসালিকোর দারুণ হেডে গোলপোস্টের একেবারে কাছেই বল পেয়ে যান পেরিসিচ৷ এত দ্রুত বলে চলে যায় জালে, কিপারের কিছুই করার ছিল না৷
দ্বিতীয়ার্ধে আর সমতা ভাঙতে পারেনি কেউ৷ খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে৷
এবার নেতৃত্ব নিয়ে নেয় ক্রোয়েশিয়া৷ আবারও পেরিসিচ, তবে এবার করলেন দুর্দান্ত এক অ্যাসিস্ট৷ ১০৯ মিনিটে ডিবক্সে বল হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন পেরিসিচ৷ স্টোনসের মাথার ওপর দিয়ে পা তুলে মারিও মান্দজুকিচ বলে গতি ঘুরিয়ে দেন ইংলিশ জালের দিকে৷
গ্যালারিতে ‘ফুটবল বাড়ি আসছে’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাজারো দর্শক ডুবলো অতিরিক্ত সময়ের কান্নায়৷ ১-২ গোলে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে ফুটবল ছাড়াই বাড়ি যেতে হলো ইংলিশ খেলোয়াড়দের৷
কার হাতে উঠছে ফুটবলের সবচেয়ে বড় সম্মান- বিশ্বকাপ? ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, নাকি নতুন পরাশক্তি ক্রোয়েশিয়া? এই প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে রোববার৷
অন্যদিকে শনিবার বেলজিয়ামের সাথে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে খেলতে হবে ইংল্যান্ডকে৷