ফুটবল কোচিং-এর জন্য ভাষাশিক্ষা!
২৬ জুন ২০১৩একটা মানুষ যে কোচ হিসেবে দায়িত্বকে কতটা আন্তরিকভাবে নিতে পারেন, তারই একটা দৃষ্টান্ত রাখলেন বার্সেলোনার সাবেক কোচ৷ সেটা বায়ার্নের কর্মকর্তা এবং প্লেয়ার কিংবা ফ্যান, সেই সঙ্গে গোটা জার্মানির সামনে৷ এ দেশে এমন বহু বিদেশি-বহিরাগতদের বাস, যারা সারা জীবনটা জার্মানিতে কাটিয়েও জার্মান শেখার কোনো আন্তরিক প্রচেষ্টা করেননি৷ অবশ্য তাঁরা গুয়ার্দিওলার মতো সম্মান, পারিশ্রমিক কিংবা অপরাপর সুযোগও পাননি৷
অপরদিকে বায়ার্ন তথা জার্মানি গুয়ার্দিওলাকে কোচ হিসেবে পেয়ে গর্বিত, আনন্দিত৷ সেই গর্ব ও আনন্দ কিন্তু মাত্রাধিক প্রত্যাশার ভূত হয়ে গুয়ার্দিওলার নিজের ঘাড়ে চাপতে পারে এবং সম্ভবত চাপবে৷ বায়ার্নের আগের কোচরাও কিছু ফেলনা ছিলেন না; বিদেশি কোচ, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা ও স্বীকৃতি সম্পন্ন কোচ বায়ার্নের আগেও ছিল৷ কিন্তু বার্সায় থাকাকালীন বিশ্বজোড়া নাম করে ফেলার পর পেপ গুয়ার্দিওলা যে মিউনিখে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার ফলে বায়ার্ন যেন ইউরোপীয় ফুটবলে নাইট উপাধি পেয়েছে!
সেই সঙ্গে দায়িত্ব, যেটা সবার আগে আঁচ করেছেন জার্মানির জাতীয় একাদশ ও বায়ার্নের ক্যাপ্টেন ফিলিপ লাম৷ গত মরশুমে ত্রিমুকুট জয়ের পর বায়ার্নের জন্য যখন চতুর্থ মুকুট খোঁজা শুরু হয়েছে, তখন লাম বলে ফেলেন, ‘‘আমাদের এবার ইউরোপীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে (কিছুদিন না কয়েক বছর?) থাকতে হবে''৷ গুয়ার্দিওলাও এবার বলেছেন, ‘‘আমার পূর্বসূরি (অর্থাৎ ইয়ুপ হাইনকেস) যে মান নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, আমি সেখানে পৌঁছনোর চেষ্টা করব৷''
শুধু জার্মান শিখলেই হল না
স্পেনের লা লিগা, বার্সেলোনার লা মাসিয়ার প্রশিক্ষণ আর টিকি-টাকা খেলা যে এক ব্যাপার, আর বুন্ডেসলিগা এবং সেই বুন্ডেসলিগায় বায়ার্নের বিশেষ নামডাক যে আরেক ব্যাপার, পেপ সেটা ভালো করেই জানেন: ‘‘বুন্ডেসলিগাকে ভালোভাবে জানতে আমার আরো সময় লাগবে৷'' বার্সা থেকে বিদায় নেবার পর হাতে যে সময় ছিল: ‘‘আমি নিউ ইয়র্কে ছিলাম৷ প্রতি সপ্তাহান্তে সব ক'টা খেলা দেখেছি, বিশেষ করে বায়ার্নের খেলা৷ খুবই ভালো বলে আমার মনে হয়েছে৷ (আমার) কাজটা সহজ নয়, এটা বুন্ডেসলিগা৷ আমাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব (বায়ার্নের) প্লেয়ার ও তাদের প্রতিপক্ষদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠতে হবে৷'' নয়ত তাঁর কাছ থেকে বিপুল প্রত্যাশার ব্যাপারে পেপ চিন্তিত নন: ‘‘বড় ক্লাবগুলোয় সবসময়েই চাপ থাকে৷ এখানেও সেই চাপ আছে, কিন্তু আমার নিজের ওপর আস্থা আছে৷ আমার এই বিরাট চ্যালেঞ্জটা নিতে কোনো সমস্যা নেই৷ সেই জন্যেই তো আমি কোচ হয়েছি৷''
শেষে গোটা তিনেক কথা বলে নেওয়া যেতে পারে৷ গুয়ার্দিওলার কাছ থেকে প্রত্যাশার পরিমাণটা দেখিয়েছেন বায়ার্নের প্রেসিডেন্ট কার্ল-হাইনৎস রুমেনিগে যখন তিনি বলেছেন: ‘‘বুন্ডেসলিগায় পেপের উপস্থিতির ফলে জার্মান ফুটবল সমৃদ্ধ হবে৷''
নিজের জার্মান শেখা সম্পর্কে গুয়ার্দিওলা বলেছেন, তাঁর শিক্ষিকা কিন্তু একজন ডর্টমুন্ড ফ্যান৷ ‘‘তিনি আমাকে এখানে আসতেই দিতেন না৷''
২৪শে জুলাই তারিখটা মনে রাখবেন৷ সেদিন মিউনিখে একটি ফ্রেন্ডলি ম্যাচে মিলিত হবে পেপ গুয়ার্দিওলার হালের ও সাবেক দুই ক্লাব: বায়ার্ন মিউনিখ ও এফসি বার্সেলোনা৷
এসি/ডিজি (এপি)