বর্ণবাদী সাবানের মেশিন
২৩ আগস্ট ২০১৭আলোচনার শুরু ১৬ আগস্ট৷ নাইজেরিয়ার লাগোস শহরের চুকওয়েমেকা আফিগবো নামের এক ব্যক্তি টুইটারে আপলোড করেন এই ভিডিও৷ ভিডিওর শুরুতেই দেখা যায় তুলনামূলক ফর্সা চামড়ার এক ব্যক্তি সোপ ডিসপেনসার বা তরল সাবানের মেশিনের নিচে হাত দিতেই তা থেকে সাবান বের হয়৷
কিন্তু বিপত্তি বাধে যখন এরপরপরই একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি সাবান নিতে যান৷ নানাভাবে মেশিনের নীচে হাত নিলেও সাবান আর বের হচ্ছিলো না৷ এ সময় পাশ থেকে কয়েকজনকে বলতে শোনা যায়, 'টু ব্ল্যাক, টু ব্ল্যাক', অর্থাৎ 'বেশি কালো, বেশি কালো৷'
স্বভাবতই, মেশিনের এমন অদ্ভুত আচরণকেই ব্যঙ্গ করছিলেন তাঁরা৷
তবে ঘটনা আরো জমে ওঠে, যখন সেই একই ব্যক্তি পাশের আরেক মেশিন থেকে হাত মোছার টিস্যু হাতে নেন৷ টিস্যুটি ছিল সাদা৷ ফলে এবার মেশিনের নিচে টিস্যু ধরতেই তা থেকে বেরিয়ে আসে সাবান৷ ঠিক এর পরপরই আবার হাত দিলেও, আবারো ব্যর্থ হন তিনি৷
ঘটনাটি কোন দেশের তা উল্লেখ করা হয়নি টুইটে৷ তবে, ভিডিও শেয়ার করে চুকওয়েমেকা তুলে ধরেছেন গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন৷ তিনি বলছেন, ‘‘প্রযুক্তিতে বৈচিত্র্য এবং সমাজে এর প্রভাবের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে যদি কারো সমস্যা হয়, এই ভিডিওটি দেখতে পারেন৷''
ভিডিওটি টুইট করার সাথে সাথে ছড়িয়ে পড়ে বিদ্যুতগতিতে৷ এক সপ্তাহে টুইটটি পছন্দ করেছেন দুই লাখের বেশি মানুষ, রিটুইট হয়েছে দেড় লাখেরও বেশি বার৷
মন্তব্যকারীদের কেউ কেউ বলছেন, এইসব মেশিন যাদের দিয়ে পরীক্ষা করা হয়, তাদের স্কিন টোন, অর্থাৎ চামড়ার রংহালকা বলে এই মেশিন কৃষ্ণাঙ্গদের বেলায় কাজ করে না৷ কৃষ্ণাঙ্গদের বিষয়টি ঠিকমতো খেয়াল রাখা হয় না বলেও মনে করেন তারা৷ কেউ কেউ আবার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন৷ বলছেন, এই সামান্য প্রযুক্তিগত সমস্যাকে বিশাল সামাজিক সমস্যা হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই৷
কেউ আবার তুলে ধরছেন এর প্রযুক্তিগত দিক৷ তাদের মতে, এই মেশিনের সেন্সর আলোর প্রতিফলনের ভিত্তিতে কাজ করে৷ অপেক্ষাকৃত কালো চামড়ায় আলোর প্রতিফলন কম হয় বলে অনেকক্ষেত্রে মেশিন বুঝতে পারে না, নীচে কিছু আছে কিনা৷
তবে, এ ধরনের ঘটনা যাদের সাথে ঘটে, তাদের যে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়, সে বিষয়ে একমত হচ্ছেন সবাই৷
এডিকে/এসিবি
আপনি কখনও এমন কিছুর শিকার হয়েছেন? লিখুন নীচের ঘরে৷