বাইডেনকে বিশ্বনেতাদের বার্তা
২১ জানুয়ারি ২০২১অ্যামেরিকায় ট্রাম্পের শাসন শেষ, শুরু প্রেসিডেন্ট হিসাবে বাইডেন সময়। আর বিশ্বনেতাদের আশা, গ্লোবাল ইস্যুর ক্ষেত্রে ট্রাম্পের পথ থেকে সরে আসবেন বাইডেন। তিনি সহযোগিতার নীতি নিয়ে চলবেন। ওভাল অফিসে বসে বাইডেন প্রথম দিনেই একগুচ্ছ প্রশাসনিক নির্দেশে সই করেছেন। ট্রাম্পের আমলের বহু সিদ্ধান্ত বদল করেছেন। তাই বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আশাও বেড়েছে।
ইউরোপের প্রতিক্রিয়া
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেছেন, ইউরোপ হলো অ্যামেরিকার বন্ধু। আর ক্যাপিটলে ঐতিহ্যবাহী শপথ অনুষ্ঠান অ্যামেরিকায় গণতন্ত্রের শক্তি দেখিয়ে দিল।
জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার ভিডিও বিবৃতিতে বলেছেন, ''বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হওয়া হলো গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ দিন।'' বাইডেন কী করে গ্লোবাল ইস্যুর মোকাবিলা করেন, সেদিকেই তিনি তাকিয়ে আছেন। তিনি বলেছেন, ''অ্যামেরিকার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা ভেঙে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন কর্মী, গভর্নর, বিচারবিভাগ, কংগ্রেস তাদের শক্তি কতটা, তা দেখিয়ে দিয়েছে।''
জার্মানির বিদেশমন্ত্রী হাইকো মাসের আশা, ''ট্রাম্পের আমলে নেয়া বিদেশনীতির বদল করবেন বাইডেন। গত চার বছরে দেখা গেছে 'অ্যামেরিকা ফার্স্ট' নীতি মানে কোনো সহযোগিতা নয়, কোনো আলোচনা নয়।''
যুক্তরাজ্য, স্পেন, ডেনমার্ক ও ইটালির নেতারাও বাইডেনকে স্বাগত জানিয়েছেন।
বাইডেনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত
প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্বভার নিয়েই বাইডেন নির্দেশ দিয়েছেন, অ্যামেরিকা আবার প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যোগ দেবে। ইউরোপীয় কমিশন তাঁর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। টুইট করে তারা জানিয়েছে, ''আমরা একসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করব।'' ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ টুইট করে বলেছেন,'' প্যারিস চুক্তিতে অ্যামেরিকাকে স্বাগত।''
ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, ''জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনার বিরুদ্ধে আমরা একযোগে লড়াই করব।''
বল অ্যামেরিকার কোর্টে: ইরান
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে যোগ দেয়া ও ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তোলার সিদ্ধান্ত এখন বাইডেনকে নিতে হবে। বল এখন অ্যামেরিকার কোর্টে। তিনি বলেছেন, ''ওয়াশিংটন যদি চুক্তিতে যোগ দেয়, তাহলে আমরাও আমাদের প্রতিশ্রুতি পালন করব।''
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন পাসকি তাঁর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ''ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিতে আবার যোগ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে বিচার-বিবেচনা করা হচ্ছে। এই বিষয়ে বাইডেন মিত্র দেশগুলির সঙ্গে কথা বলবেন।''
ল্যাটিন অ্যামেরিকার আশা
ল্যাটিন অ্যামেরিকার নেতারা আশা করছেন, বাইডেন এবার নিষেধাজ্ঞা তুলবেন। অভিবাসন নীতিতে সংস্কার করবেন। ট্রাম্প ল্যাটিন অ্যামেবিকার কিছু দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বের নীতি নিয়ে চলেছিলেন, আবার কিছু দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডোরের অনুরোধ, বাইডেন যেন উন্নয়নের নিরিখে মার্কিন-মেক্সিকোর সম্পর্ককে দেখেন, নিরাপত্তা ও সামরিক দৃষ্টিতে নয়। ট্রাম্পের বন্ধু ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারো বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত, সেই ভিশন নিয়ে তিনি বাইডেনকে চিঠি পাঠাবেন।
মধ্যপ্রাচ্য
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি অ্যামেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক আরো ভালো করতে চান এবং একসঙ্গে ইরানের কাছ থেকে আসা সম্ভাব্য বিপদ ঠেকাতে চান। তিনি বাইডেনের সঙ্গে উষ্ণ ব্যক্তিগত সম্পর্কও গড়ে তুলতে চান।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের আশা, বাইডেন এবার নীতি বদল করবেন এবং প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবেন।
মোদীর বার্তা
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলছেন, তিনি ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করতে চান। দুই দেশের মধ্যে আর্থিক সহযোগিতা বাড়াতে চান।
জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)