বাঘের এলাকায় গন্ডার
৬ ডিসেম্বর ২০১৯বাঘের রাজ্যে এ বার ঢুকতে চলেছে গন্ডার ৷ এক শৃঙ্গ, ওজনদার এই প্রাণী অদূর ভবিষ্যতে প্রবেশ করতে চলেছে উত্তরাখণ্ডের জিম করবেট জাতীয় উদ্যানে ৷ প্রবাদপ্রতিম শিকারী, বাঘ বিশেষজ্ঞ ও সুলেখক জিম করবেটের নামাঙ্কিত এই অভয়ারণ্য মানেই এতদিন ছিল বাঘ এবং বুনো হাতি৷ কিন্তু এ বার সেখানে পরীক্ষামূলকভাবে ডজন খানেক গন্ডার রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উত্তরখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত ও সে রাজ্যের বন্য প্রাণী বোর্ড৷ সেই গন্ডার আনা হবে অসম ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে৷ ফলে ভবিষ্যতে করবেট গেলে বাঘ, হাতির সঙ্গে গন্ডারেরও দেখা মিলবে৷!
বাঘের রাজ্যে ঢুকলে কোনও বিপর্যয় হবে না তো? পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বন্যপ্রাণী বোর্ডের সদস্য বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী এখন গন্ডার নিয়েই কাজ করছেন উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ''আমি এ ভাবে এক জায়গা থেকে প্রাণীকে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার বিরুদ্ধে৷ এতে অধিকাংশ সময়ই দেখা যায় ফল উল্টো হয়েছে৷ দুধওয়াতে এই পরীক্ষা ব্যর্থ হয়েছে৷ যেখানে গন্ডার আছে, সেই অসম বা উত্তর বঙ্গেই যদি আশেপাশের বনে পরীক্ষা করা হত সেটা তাও ঠিক ছিল৷’’
আবার বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞ অজয় সুরি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘‘এই পরীক্ষায় কোনও অসুবিধা নেই৷ করবেটে এতদিন বাঘে, হাতিতে শান্তিপূর্ণভাবে থেকেছে, কোনও অসুবিধা হয়নি৷ গন্ডার এলেও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়৷ এখানে তো গন্ডারকে ঢোকানো হচ্ছে৷ দুধওয়াতে বুনো হাতি নেপাল থেকে এসে বসবাস করছে৷ বাঘেদের তাতে কোনও অসুবিধা হয়নি৷ কাজিরঙ্গাতেও তো বাঘ আছে৷ সেখানেও সমস্যা নেই৷’’
করবেটে গন্ডার প্রবেশ করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পরিবেশটা ভালো করে খতিয়ে দেখে নেওয়া হয়েছে৷ করবেটের পরিবেশে গন্ডার দিব্যি মানিয়ে নিতে পারবে বলে উত্তরাখণ্ড সরকারের মত৷ গন্ডারের বাসস্থান কমতে কমতে এখন দেশের স্বল্প এলাকা জুড়েই আছে৷ সেটা বাড়লে ক্ষতি কী, এটাই বলছেন অজয় সূরির মতো বিশেষজ্ঞরা৷ ফলে এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা৷ তারপর দেখার করবেটের জঙ্গলে বাঘে গন্ডারে কেমন একঘাটে জল খাচ্ছে৷