অশান্ত মিশর
২৮ জানুয়ারি ২০১৩মিশরে বেশ আগে থেকেই চলছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ৷ তবে জরুরি অবস্থা জারির কারণ সরকারবিরোধীদের বিক্ষোভ আন্দোলন নয়, কারণ একটি ফুটবল ম্যাচ৷ গত বছর এক ফুটবল ম্যাচের সময় শুরু হওয়া দাঙ্গায় ৭৪ জন মারা যায়৷ শনিবার ওই ঘটনার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে ২১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় কায়রোর আদালত৷ তারপরই শুরু হয়ে যায় মূলত পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দাঙ্গা৷
রায় ঘোষণার পরই পোর্ট সাঈদের শত শত মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে৷ হতাহতের ঘটনা ওই শহরেই সবচেয়ে বেশি৷ পুলিশের সঙ্গে শনিবার পোর্ট সাঈদের বিক্ষোভকারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে ওই দিন ঐ এক শহরেই মারা যান ৩৩ জন৷ দাঙ্গায় দু'দিনে সব মিলিয়ে ৪০ জন এবং রবিবার পোর্ট সাঈদে আগের দিনের নিহতদের নিয়ে বিক্ষোভকারীরা শব যাত্রা করার সময় গুলিতে আরো সাতজন মারা গেলে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ভাষণ দিয়ে পোর্ট সাঈদ, ইসমাইলিয়া এবং সুয়েজে এক মাসের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন মুসলিম ব্রাদারহুড নেতা, মিশরের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্দদ মুরসি৷ জরুরি অবস্থা সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে৷
রবিবার পোর্ট সাঈদে শনিবারের নিহতদের লাশ নিয়ে মিছিল করার সময় ‘‘মুরসির পতন হোক, সরকার নিপাত যাক, তারা আমাদের হত্যা করেছে, তারা আমাদের নির্যাতন করেছে'' বলে স্লোগান দেয়৷ ওই শহরের বিক্ষোভকারীরা মনে করেন, আদালতের রায়ে তাঁদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে, অন্যায়ভাবে তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে৷ ইসমাইলিয়া এবং সুয়েজের মানুষও তাই মনে করে৷ তাঁদের শহরের ফুটবলপ্রেমীদের দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়ায় ওই দু'টি শহরও এখন বিক্ষোভে উত্তাল৷
এদিকে মিশরে মুরসি সরকার বিরোধী আন্দোলন এখনো চলছে৷ তাহরির স্কয়ারে এখনো অবস্থান করছেন মুরসির পতন দাবি করে বিক্ষোভে নামা সরকার বিরোধীরা৷ সোমবার সেখানেও গুলিতে আহত হবার পর হাসপাতালে নেয়ার পথে একজন মারা গেছেন৷ রবিবারের ভাষণে মুরসি বিরোধী দলের নেতাদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানান৷ বিরোধীদের জোট ন্যাশনাল স্যালভেশন ফ্রন্ট (এনএসএফ) প্রেসিডেন্টের এ প্রস্তাবে সম্মতির কথা জানালেও, জোটের বাইরের কিছু দল মনে করে এ আলোচনায় সময় নষ্ট করা ছাড়া কাজের কিছু হবে না৷
এসিবি/ডিজি (এপি/রয়টার্স)