মিশর
২৬ ডিসেম্বর ২০১২মিশরে গত দুই সপ্তাহ ধরে আয়োজিত গণভোটের সরকারি ফল বলছে, প্রায় ৬৪ শতাংশ ভোটার নতুন সংবিধানের পক্ষে ভোট দিয়েছেন৷ দেশটির নির্বাচন কমিশন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই ফল ঘোষণা করে৷ এর মধ্য দিয়ে সেটা আইনে পরিণত হলো৷ অবশ্য গণভোটে ভোটার উপস্থিতি ছিল মাত্র ৩৩ শতাংশ৷
প্রস্তাবিত নতুন সংবিধান বাতিলের দাবিতে মিশরে গত প্রায় এক মাস ধরে বিক্ষোভ চলছে৷ তারা গণভোট বাতিলেরও দাবি জানিয়েছিল৷
গণভোটে কারচুপির অভিযোগ এনেছে মূল বিরোধী জোট ন্যাশনাল স্যালভেশন ফ্রন্ট৷ তারা ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে৷ ফ্রন্টের মুখপাত্র খালেদ দাউদ বলেছেন যে, তাঁরা মিশরের জনগণের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন৷
এদিকে, গণভোটকে ঘিরে মিশরে যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে সেটা দূর করতে দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাশটনও বিভক্তি দূর করতে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন৷
নতুন সংবিধানে ইসলামি শরিয়াকে দেশ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় আইনের ভিত্তি ধরা হয়েছে৷ এই বিষয়টিতেই মূলত বিরোধীরা প্রতিবাদ করে আসছে৷ পশ্চিমা বিশ্বও সংবিধানের এই ধারা নিয়ে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে৷ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ মিশরকে ৪.৮ বিলিয়ন ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রাখারও ঘোষণা দিয়েছে৷
সংবিধান অনুযায়ী, একজন প্রেসিডেন্ট চার বছর করে দুই মেয়াদে সর্বোচ্চ আট বছর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন৷
এছাড়া নতুন সংবিধানের কারণে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা পাচ্ছে সংসদের উচ্চকক্ষ৷ এই ক্ষমতা সাময়িকভাবে মুরসির ছিল৷ শনিবার প্রেসিডেন্ট মুরসি উচ্চকক্ষে বক্তব্য রাখবেন বলে জানা গেছে৷ আগামী দুই মাসের মধ্যে সংসদের নিম্নকক্ষে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ এরপর আইন প্রণয়নের ক্ষমতা চলে যাবে তাদের কাছে৷
প্রথমে সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক বিরোধী বিক্ষোভ, পরে নতুন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির ডিক্রি জারি ও নতুন সংবিধান পাসের প্রক্রিয়াকে ঘিরে ধারাবাহিক আন্দোলনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিশরের অর্থনীতি৷
এই অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করে দেশ পুনর্গঠনের জন্য সহায়তা চাইতে আগামী ২৯শে জানুয়ারি জার্মানি সফরে আসবেন প্রেসিডেন্ট মুরসি৷ মিশরের সরকারি সংবাদপত্র আল-আহরাম বুধবার জানিয়েছে এই তথ্য৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ)