বিজ্ঞানের প্রতি তরুণদের আগ্রহ সৃষ্টি
৪ অক্টোবর ২০১৩বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি একটি জাতির অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে৷ অল্প বয়সেই যদি মেধাবীদের চিন্তাভাবনায় এর বীজ বুনে দেয়া হয়, তবে এটিকেই তারা পেশা হিসেবে নিতে এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়তে পারে৷
এ বছরের ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কনটেস্ট ফর ইয়াং সায়েনটিস্টস' বা ইইউসিওয়াইএস-এর বিজয়ী ব্রিটিশ কিশোর ফ্রেড টার্নার বলেছেন, এটা আসলেই ভীষণ জরুরি৷ যত বেশি তরুণদের বিজ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত করা যায়, ততই ভালো৷ যদি কেউ তাদের বিজ্ঞানের ব্যাপারে উৎসাহ না দিতে পারে, তবে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে ইউরোপ পিছিয়ে যাবে৷
বাসায় তৈরি ডিএনএ-র ফটোকপি মেশিন
ফ্রেড বিজ্ঞানের ব্যাপারে দারুণ উৎসাহী৷ সে এ বিষয়ে বরাবরই বেশ ভালো৷ যুক্তরাজ্যের ইয়র্কশায়ার থেকে আসা ফ্রেড প্রাগে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় গ্রেট ব্রিটেনের প্রতিনিধিত্ব করছে৷ সে প্রতিযোগিতায় উপস্থাপন করেছে পলিমারেস চেইন রিয়্যাকশন বা পিসিআর মেশিন, যেটি দিয়ে বিজ্ঞানীরা ডিএনএ-র বিভিন্ন স্থান কপি করতে পারবেন৷
ফ্রেড এ বছর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে৷ কিন্তু তার কাছে উন্নতমানের গবেষণাগার ছিল না৷ তাই সে এমন একটি জিন গবেষণাগার বানাতে চাইছিল, যাতে বিভিন্ন ধরনের জিন নিয়ে গবেষণা করা যায়৷ ফ্রেড টার্নার জানায়, একটি বাণিজ্যিক পিসিআর মেশিনের দাম পড়ে ৩ হাজার পাউন্ড৷ কিন্তু তার কাছে এত অর্থ না থাকায়, সে নিজেই এমন একটা মেশিন বানানোর পরিকল্পনা করে এবং মাত্র আড়াই পাউন্ড খরচ করেই তৈরি করে ফেলে মেশিনটি৷
বাড়ছে প্রতিযোগীর সংখ্যা
প্রতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো থেকে ২৭ জন এবং অতিথি দেশগুলো থেকে ১০ জন প্রতিভাবান কিশোর বিজ্ঞানী অংশ নেয় এই প্রতিযোগিতায়৷ এবার এই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ১২৬ জনে৷ তুরস্কের সেকেন্ডারি স্কুলের দুই শিক্ষার্থী ক্যানসার চিকিৎসায় তাদের গবেষণা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে, তেমনি হাঙ্গেরির এক পোকার খেলোয়াড়ও পোকার-প্লেয়িং রোবট নিয়ে হাজির হয়েছে প্রতিযোগিতায়৷
এ বছরের প্রতিযোগিতার প্রধান ব্যবস্থাপক কাটেরিনা সোবোতকোভা জানালেন, তাদের মূল উদ্দেশ্য তরুণ, মেধাবী বিজ্ঞানীদের একসাথে করা, যারা তাদের নতুন নতুন দারুণ সব প্রকল্প উপস্থাপন করবেন এখানে৷
পদার্থবিদ্যা নিয়ে অহেতুক ভয়
প্রাগের চেক টেকনিকাল ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের অধ্যাপক মার্টিন সামেক মনে করেন, তরুণরা প্রযুক্তিগত বিজ্ঞানকে বেশ ভয় পায়৷ বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এখন অর্থনীতি, আইন এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রতি বেশি আগ্রহী৷ তাদের মনে গণিত, পদার্থবিদ্যা এবং প্রযুক্তিগত বিজ্ঞান নিয়ে বেশ ভীতি রয়েছে৷
তবে এই প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীরা বিভিন্ন রকম রোবট উপস্থাপনের মাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থীর ভীতি দূর করতে সক্ষম হয়েছে বলে মনে করেন সামেক৷ জানান, এই বিষয়টি তাদের আগ্রহী করে তুলেছে আর সেটা সত্যিই লক্ষ্যণীয় একটা ব্যাপার৷