পেপ গুয়ার্দিওলা
৫ মে ২০১২‘‘আমি বিদায় নেওয়া পছন্দ করি না৷ কিন্তু মানুষ আমাকে চেনে৷ কাজেই আমি আশা করব তারা তাদের স্বভাবগত ব্যবহার করবে৷ আমি এখানে চার বছর ধরে কোচ ছিলাম৷ কাজেই ব্যক্তি হিসেবে আমার প্রতি মানুষের কিছু ভালোবাসা থাকবেই৷ কিন্তু তা গৌণ হওয়া উচিৎ৷ লোকে আসলে একটা ফুটবল খেলা দেখতে আসছে,'' শুক্রবার বিকেলে বলেন গুয়ার্দিওলা৷ মানুষটাকে কিছুটা তাই দিয়েই চেনা যায়৷
ইওসেপ গুয়ার্দিওলা দি সালা'র জন্ম ১৯৭১ সালে৷ ১৩ বছর বয়সে এফসি বার্সেলোনার যুব অ্যাকাডেমি লা মাসিয়া'য় ভর্তি হন৷ বার্সা'র যুব টিমে খেলতেন মিডফিল্ডের ডান দিকে৷ ওলন্দাজ ফুটবলের কিংবদন্তী এবং বার্সা'র সাবেক কোচ ইওহান ক্রয়েফ খুদে স্টেডিয়ামে পেপ'কে খেলতে দেখে নির্দেশ দেন, তাকে স্টপার পোজিশনে খেলানোর৷ বিশে পা দেওয়ার আগেই পেপ বার্সার পেশাদারি দলে অন্তর্ভুক্ত হন এবং স্পেনের প্রিমেরা দিভিজিওন'এ তাঁর আবির্ভাব ঘটে৷
গুয়ার্দিওলা ছিলেন ইওহান ক্রয়েফের সেই ‘ড্রিম-টিমের' স্থায়ী সদস্য৷ এবং তার পরেও তাঁকে বাদ দিয়ে বার্সা'কে ভাবাই যেতো না৷ বার্সার হয়ে মোট ১৭ বছর খেলেছেন৷ সেই সময়ে বার্সা জিতেছে ১৬টি খেতাব৷ ২০০১ সালে লুই ফ্যান খাল কোচ থাকাকালীন গুয়ার্দিওলা প্রথম বাদ পড়েন৷ যে কারণেই হোক, সে সময় ক্লাবের কাছ থেকে বিদায় সম্বর্ধনা নিতে চাননি পেপ৷
বার্সার পর ইটালিতে আরো দু'টি ক্লাবের হয়ে খেলেছেন গুয়ার্দিওলা, তবে বার্সার মতো সাফল্য পাননি৷ সক্রিয়ভাবে পেশাদারি ফুটবল খেলার শেষ প্রচেষ্টা মেক্সিকোয়, ২০০৬ সালে, এবং ছমাস পরেই তার ইতি৷ ইওহান ক্রয়েফের আমলেই তাঁকে ক্রয়েফের ডান হাত বলা হতো৷ কাজেই ২০০৮ সালে বার্সার প্রসিডেন্ট জোয়ান লাপোর্তা যখন ঘোষণা করেন যে, গুয়ার্দিওলা বার্সার মুখ্য কোচ হতে চলেছেন, তখন গুয়ার্দিওলা'র পুরনো সতীর্থরা কেউ আশ্চর্য হননি৷ আশ্চর্য হয়েছিলেন বার্সার তখনকার তিন তারকা রোনাল্দিনিয়ো, ডেকো এবং স্যামুয়েল এ'টো, যখন গুয়ার্দিওলা তাদের সরাসরি জানিয়ে দেন যে, তাদের আর কাজে লাগানো হবে না৷ ২০১০ সালে ঠিক তেমনিভাবেই স্লাটান ইব্রাহিমোভিচকে বিদায় দেন পেপ৷
কিন্তু এবার পেপ'এর নিজেরই বিদায়ের পালা৷ পেপ'এর আমলে বার্সার সাফল্যের কাহিনি সুবিদিত৷ সেই বার্সা ছাড়ছেন পেপ৷ কেন? গুয়ার্দিওলার নিজের ভাষায়: ‘‘সারা জীবন ধরে কেউ বার্সার কোচ থাকতে পারে না৷''
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী (রয়টার্স)
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই