ব্যক্তিগত স্বার্থে ‘ব্লাসফেমি' আইনের ব্যবহার
২৫ নভেম্বর ২০১৪চলতি মাসে কোরান অবমাননার অভিযোগে এক খ্রিষ্টান দম্পতিকে ১,৫০০ মানুষ পিটিয়ে হত্যা করে তাঁদের শরীর জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে ছুড়ে ফেলে দেয়৷ ঐ ঘটনার পরদিন এক পুলিশ ব্লাসফেমি আইনের আওতায় বন্দি এক ব্যক্তিকে কুড়াল দিয়ে কোপ মেরে হত্যা করে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে আইনটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যাক্তিগত বিরোধের জেরে কাজে লাগানো হচ্ছে৷ ব্লাসফেমি আইন ভঙ্গকারীদের যারা হত্যা করেছে বা হত্যা প্ররোচনায় উদ্বুদ্ধ করেছে, তাদের আজ পর্যন্ত কোনো শাস্তি হয়নি৷
আইনজীবী আসমা জাহাঙ্গীর সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে বলেছেন, ‘‘এ ঘটনার পর ইতিবাচক দিক হলো আলেম ওলামা এবং জামায়াত-ই-ইসলামী দলসহ বেশ কিছু দল এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে৷ আমার মনে হয়, এটা একটা বড় ধরনের পরিবর্তন এবং আমাদের এটাকে স্বাগত জানানো উচিত৷''
পাকিস্তানে এখনো নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, বৈষম্য, নির্যাতন এবং কারাভোগ খুব সাধারণ ঘটনা, যা মানবাধিকার কর্মীদের কাছে উদ্বেগের বিষয়৷ আসমা জাহাঙ্গীর বলেন, একটা সময় ছিল যখন নারী অধিকার এখানে পশ্চিমাবিশ্বের ধারণা হিসেবে গণ্য হত, তবে এখন মানুষ নারী অধিকার নিয়রে আলোচনা করে৷ রাজনৈতিক দল এবং ধর্মীয় দলগুলো এ নিয়ে কথা বলছে৷
ব্লাসফেমি আইন
ধর্মীয় বিদ্বেষ সৃষ্টিকারী বক্তব্য বা অবমাননাকর আচরণের বিচারের জন্য যে আইন, সেই আইনের নামই ব্লাসফেমি৷ ব্লাসফেমি আইনে ইসলাম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে৷ পাকিস্তানের ৯৭ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী৷ পাকিস্তানে অনেক বছর ধরেই বলবৎ এই আইনটি৷
পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনে অভিযুক্ত হওয়া এবং বিচারের মুখোমুখি হওয়া কোনো নতুন ঘটনা নয়, অস্বাভাবিক ঘটনাও নয়৷ পাকিস্তানের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বক্তব্য অনুযায়ী কত লোক যে প্রতি বছর এই অভিযোগে অভিযুক্ত হন তাঁর কোনো নির্ভরযোগ্য হিসেব পর্যন্ত নেই৷ কেননা গ্রামাঞ্চলে এ সব অভিযোগ আনা হয় সবচেয়ে বেশি৷ অনেকেই এগুলো মানবাধিকার সংগঠনের গোচরে পর্যন্ত আনেন না৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি)