আর্থিক ভাতা কমালে জার্মানিতে আশ্রয়ের আকর্ষণও কমবে
১৭ আগস্ট ২০১৫জার্মানির ভাতা অন্যত্র মাসিক বেতনের সমান
বলকান অঞ্চলের পশ্চিমাঞ্চলের অনেক দেশে বহু মানুষের আয়ের অঙ্ক জার্মানিতে আশ্রয়প্রার্থীদের ভাতার সমান৷ তার উপর এই সব দেশে সহজে কাজ খুঁজে পাওয়াও কঠিন৷ তাই সেখানকার অনেক মানুষ সুদিনের আশায় কেন জার্মানির উদ্দেশ্যে পাড়ি দিচ্ছেন, তা বোঝা কঠিন নয়৷ তবে খুব কম আবেদনই শেষ পর্যন্ত স্বীকৃতি পায়৷ কারণ জার্মানির আইন অনুযায়ী শুধু সেই সব মানুষই রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে পারেন, যারা দেশে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন৷
যারা দারিদ্রকে রাজনৈতিক আশ্রয়ের কারণ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে, তাদের মনে রাখতে হবে যে বিশ্বের জনসংখ্যার একটা বড় অংশই সে ক্ষেত্রে জার্মানিতে আসার অধিকার পেতে পারে৷ এই মুহূর্তে জার্মানিতে আশ্রয়প্রার্থীদের প্রায় ৪০ শতাংশই এসেছেন বলকান অঞ্চলে পশ্চিমের দেশগুলি থেকে৷ এই সব মানুষকেও আশ্রয়ের আবেদনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে, তাদের জন্য খাদ্য ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে৷ ফলে যুদ্ধ ও গৃহযুদ্ধের কারণে যারা জার্মানিতে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন৷
বাসের টিকিট না আর্থিক ভাতা?
আশ্রয়প্রার্থীদের নগদ অর্থের বদলে কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু সুবিধা দেওয়া যায় কিনা, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ বিশেষ করে জার্মানির অনেক রাজ্যে কয়েক মাস আগেই প্রাপ্য ভাতা দেবার যে চল রয়েছে, ফেডারেল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তা মোটেই পছন্দ নয়৷ আশ্রয়প্রার্থীরা সেই অর্থ হাতে পেয়ে আদম ব্যবসায়ীদের ঋণ মেটানোর চেষ্টা করেন, এমনটা অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে৷
ফলে অর্থের বদলে সুযোগ সুবিধা দেবার আইডিয়া অবশ্যই ঠিক৷ এর ফলে মানবিক মর্যাদারও ক্ষতি হবে না৷ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নগদ অর্থ বা বাসের টিকিট সেই মর্যাদার কোনো পরিবর্তন ঘটায় না৷ অন্যদিকে এই ব্যবস্থা চালু হলে জার্মানিতে আশ্রয়ের আকর্ষণ কমে যেতে পারে৷ বর্তমানে আবেদন নাকচ হবার সম্ভাবনা বেশি হলেও প্রক্রিয়া চলাকালীন বড় অঙ্কের আর্থিক ভাতার লোভ আর সে ক্ষেত্রে থাকবে না৷ এমন বার্তার গুরুত্ব আছে বৈকি৷
এই মুহূর্তে জার্মানিতে অনেকেরই মনে শরণার্থীদের প্রতি উদার মনোভাব সম্পর্কে ভুল ধারণা রয়েছে৷ জার্মানিতে যে শরণার্থী থাকতে চায়, কোনো না কোনো পথে তার সেই উপায় রয়েছে৷ অনেক নাগরিকের ধারণা, রাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে তার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে৷ এর ফলে শরণার্থীদের স্বাগত জানানোর প্রবণতাও কমছে৷ এই প্রেক্ষারটে জার্মান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রস্তাব এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকী পদক্ষেপ হতে পারে৷ এমনটা হলে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের আস্থা আবার ফিরে আসবে৷