1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতের উন্নতির সুফল পাচ্ছে না দরিদ্ররা

২৩ ডিসেম্বর ২০১১

ভারত অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে - এই কথাটা এখন প্রায়ই শোনা যায়৷ কিন্তু তাতে লাভ হচ্ছেনা দরিদ্র মানুষের৷ এখনো দুই বেলা খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের৷

https://p.dw.com/p/13XtW
কৃষি কাজে ব্যস্ত এক ভারতীয় নারীছবি: AP

পশ্চিমবঙ্গের মেয়ে রিতা মাঝি৷ পাঁচ বছর আগে তিনি জীবিকার সন্ধানে পাড়ি জমান রাজধানী নতুন দিল্লিতে৷ সেখানে বাড়ি বাড়ি কাজ করেন তিনি৷ গত দুই বছর ধরে মাছ বা মাংস খাওয়ার সৌভাগ্য হচ্ছে না তার৷ অথচ বেতন বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ৷ কিন্তু সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে আর সবকিছুর দাম৷ অর্থাৎ ঘটেছে মূল্যস্ফীতি৷ তাই বেতন বাড়ার সুফল পাচ্ছেন না তিনি৷

জানা গেছে, গত এক বছর ধরে ভারতে মূল্যস্ফীতির হার নয় শতাংশের ওপরে৷ বিশ্বব্যাংকের হিসেবে, দেশটির প্রতি তিনজনের একজন দৈনিক সোয়া এক ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১০০ টাকায় দিন চালায়৷ আর অর্থনীতিবিদ উৎসা পাটনায়েক বলছেন, আরও ভালভাবে হিসেব করলে দেখা যাবে, ভারতের প্রতি তিনজনের দুইজন দরিদ্র এবং অপুষ্টিতে ভুগছে৷ গত প্রায় ২০ বছর ধরে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের হার কমছে বলে জানান তিনি৷ এর সত্যতা জানা যায় পরিকল্পনা কমিশনের এক প্রতিবেদনে৷

Flash-Galerie Bildergalerie Jahresrückblick Naturkatastrophen 2011 Flut Überschwemmung Tsunami Brand Erdbeben
ছবি: AP

এসব পরিসংখ্যান ভারত সম্পর্কে একটা নেতিবাচক ধারণা দিলেও আদতে কিন্তু ভারত উন্নতিই করছে৷ তাহলে, প্রশ্ন জাগতে পারে, উন্নতির সুফল কে ভোগ করছে? উত্তর - ধনীরা৷ ‘অরগানাইজেশন ফর ইকনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট' যেটা ওইসিডি নামে বেশি পরিচিত, তারা বলছে গত বিশ বছরে ভারতে ধনী ও দরিদ্র মানুষের আয়ের মধ্যে ফারাক বেড়েছে৷ অর্থাৎ, ধনী আরো ধনী হয়েছে৷ আর গরিবরা হয়েছে আরও গরিব৷ সবচেয়ে বেশি টাকা উপার্জন করা ১০ শতাংশ লোক যে অর্থ আয় করেন সেটা, সবচেয়ে কম টাকা উপার্জন করা ১০ শতাংশ লোকের চেয়ে ১২গুন বেশি৷ অথচ ২০ বছর আগে এই পার্থক্যটা ছিল অর্ধেক, মান ছয় গুন৷

ফলে রিতা মাঝি এক মাসে যে টাকা পান, দেখা যায় উচ্চমধ্যবিত্ত কেউ হয়তো সেটা একবার খেয়েই খরচ করে ফেলেন৷

রিতার মতো আরেকজনের কথা বলা যেতে পারে, যার নাম পুরান ভাস্বর৷ তিনিও কাজ করেন নতুন দিল্লিতে৷ আর তার পরিবার থাকে রাজস্থানে৷ পাঁচ সন্তান তার৷ ভাস্বর বলছেন, তিনি তার সন্তানদের দুবারের বেশি খাবার দিতে পারেন না৷ সকালে রুটির সঙ্গে চাটনি আর সন্ধ্যায় রুটির সঙ্গে বাজারের সবচেয়ে কম দামের সবজি৷ এই হলো দিনের খাবার৷

এই পরিস্থিতিতে গরিবদের কাছে কম মূল্যে খাবার পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার৷ বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে সংসদে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে৷

অবশ্য এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম নয়৷ আগেও এমন ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি৷ দেখা গেছে, প্রায় ৪০ শতাংশ খাবারই এমন সব লোক পাচ্ছে যারা গরিব নয়৷ খোদ অর্থ মন্ত্রণালয় দিয়েছে এই তথ্য৷ ফলে নতুন উদ্যোগটা সফল হবে সেটা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ কেননা সেই একই পদ্ধতিতে এবারও খাবার সরবরাহ করা হবে৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য