1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে যারা ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের সমর্থক

১৮ মার্চ ২০২২

ভারতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং ডানপন্থি দলগুলির মধ্যে মস্কোর প্রতি সমর্থন বাড়ছে৷ ভারত সরকারও রুশ হামলার নিন্দা করেনি৷

https://p.dw.com/p/48hXO
Indien Neu Delhi | Aktivisten Hindu Sena | Putin-Fans
ছবি: Imtiyaz Khan/AA/picture alliance

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনকে সমর্থন জানিয়ে একটি সমাবেশের আয়োজন করেছিল ডানপন্থি সংগঠন হিন্দু সেনা ৷ চলতি মাসের শুরুতে নয়াদিল্লিতে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে মিছিল করেছিল তারা৷ সেখানে অনেকের পোস্টারে লেখা ছিল, ‘‘রাশিয়া তুমি লড়াই করো৷ আমরা তোমার পাশে আছি৷'' অন্য পোস্টারে লেখা ছিল, ‘‘ভারত-রুশ ঐক্য দীর্ঘজীবী হোক'' কিংবা কোথাও লেখা ‘‘অবিভক্ত রাশিয়া''৷

হিন্দু সেনা একেবারে ছোট একটি রাজনৈতিক দল, কিন্তু ভারতের ১৬টি রাজ্যে তাদের শাখা রয়েছে৷ তারা দাবি করেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের প্রায় ১০ লাখ সমর্থক রয়েছে তাদের৷

হিন্দুসেনার সভাপতি বিষ্ণু গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রাশিয়া ভারতের প্রকৃত বন্ধু৷ এদিকে  ইউক্রেন সবসময় পাকিস্তানকে সমর্থন করে৷ আমাদের পরমাণু প্রকল্পের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল ইউক্রেন৷ ভারতের এখন উচিত রাশিয়ার পাশে থাকা৷''

কেন কয়েকজন ভারতীয় রাশিয়াকে সমর্থন করছেন?

ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকদের প্রতি সহানুভূতি রয়েছে কলেজ পড়ুয়া রিচা কাপুরের৷ কিন্তু  তিনি মনে করেন, পশ্চিমা শক্তিগুলির কোনো অধিকার নেই রাশিয়ার সমালোচনা করার৷ এই প্রসঙ্গে আফগানিস্তানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন তিনি৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘এগুলি পশ্চিমা শক্তির দ্বিচারিতা৷''

মহেশ কুমার আগরওয়াল নামে এক আইনজীবী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘একসময় যা যা সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল, তার সবকটি অংশের নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার কাছেই তো থাকা উচিত৷''

আবার ভূরাজনীতির বিষয়টি মাথায় রেখে ভারতের অতি ডানপন্থি সংগঠনগুলি ‘অখণ্ড ভারত'-এর ধারণায় বিশ্বাসী৷ এই ‘অখণ্ড ভারত' আফগানিস্তান থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত বিস্তৃত৷ এই অবিভক্ত জাতিসত্ত্বার মূল শক্তি ভারত, এমনটাই মনে করে তারা৷

পুটিনের কয়েকজন ভারতীয় সমর্থক আবার রাশিয়ার সঙ্গে ঐতিহাসিক চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন৷ বিশেষ করে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মু্ক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারতকে সমর্থন করেছিল, এ কথা উল্লেখ করেছেন তারা৷

জাগরণ ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশনের অধিকর্তা নলিনীরঞ্জন মোহান্তি মনে করেন, ‘‘সাবেক ইউএসএসআর-এর সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং রুশ-চীন ঘনিষ্ঠতার হুঁশিয়ারিও ভারতে রাশিয়ার প্রতি সমর্থন গড়ে ওঠার একটা কারণ৷''

সরু সুতোর উপরে ভারতীয় নেতৃত্ব

রাশিয়ার সঙ্গে ভারত ঐতিহাসিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক ছাড়াও, ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতির একটি মূল ভাবধারা হল রাশিয়াসহ সমস্ত বড় শক্তির সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক , সুসম্পর্ক বজায় রাখার ইচ্ছা৷ চলমান রুশ আগ্রাসনের পর থেকে ভারত একটি কূটনৈতিক অবস্থান নিয়েছে৷ জাতিসংঘের প্রতিটি প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে ভারত৷ এর মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, জাতিসংঘের সাধারণ সভা, মানবাধিকার পরিষদ এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার ভোট৷

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিপ্রি) জানাচ্ছে, রাশিয়া ভারতের মূল অস্ত্রের শীর্ষ সরবরাহকারী৷ যদিও সম্প্রতি রুশ অস্ত্রের আমদানি কমেছে ভারতে৷ এদিকে পুটিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয় রাজনৈতিক ভাবমূর্তির একটা মিল রয়েছে৷

গণমাধ্যম গবেষক রাকেশ বটব্যাল বলেন, ‘‘দুজনেরই একটা মাচো-ম্যান ভাবমূর্তি রয়েছে৷ জাতীয়তাবাদী এবং উগ্র নেতৃত্বের বিষয়টিও রয়েছে তাদের মধ্যে৷''

ভারতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কারা?

রুশ আগ্রাসন নিয়ে কেউ কেউ সরব হয়েছেন৷ তাদের দাবি, সার্বভৌম জাতি হিসেবে ইউক্রেনে হামলা চালানোর জন্য রাশিয়ার সমালোচনা করুক নয়াদিল্লি৷ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের বক্তব্য, ‘‘রাশিয়া বন্ধু রাষ্ট্র৷ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকতে পারে৷ তবে ভারতের এই নীরবতা ইউক্রেন এবং তাদের বন্ধুরাষ্ট্রগুলির জন্য হতাশাজনক৷''

থারুরের কথায়, ‘‘ভারতের মতো দেশ একদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আসনের জন্য উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করে, অন্যদিকে ভারত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতি নিয়ে সম্পূর্ণ নীরব৷ এই বিষয়টি ভালো দেখায় না৷''

কংগ্রেসের আরেক নেতা মণীশ তিওয়ারি টুইটবার্তায় লিখেছেন, ‘‘ভারতের উচিত ইউক্রেনীয়দের পাশে থাকা৷ এই আগ্রাসন নজিরবিহীন এবং অযৌক্তিক৷ বন্ধু ভুল করলেও তা ধরিয়ে দেয়া প্রয়োজন৷''

ইউক্রেন যুদ্ধ: রাশিয়ার সামরিক কৌশল ও ভূরাজনীতি

মূরলী কৃষ্ণন/আরকেসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য