ইউক্রেন ফেরত ভারতীয় পড়ুয়াদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত
৭ মার্চ ২০২২হাঙ্গেরির সীমান্ত পার করে বিশেষ এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে দিল্লি এসে পৌঁছেছেন ইউক্রেনের মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া হামজা কবীর। ১৯ বছরের এই ছাত্র দুই বছর আগে ইউক্রেনে গেছিলেন ডাক্তারি পড়তে। প্রায় ৪০ লাখ টাকা খরচ করে ইউক্রেনে পড়তে যাওয়ার জন্য বিপুল টাকা এডুকেশন লোন নিতে হয়েছে তাকে। ডিডাব্লিউকে হামজা বলছিলেন, একবার ডাক্তারি পাশ করলে ওই টাকা মাসে মাসে ব্যাংকে শোধ দিতে হবে তাকে। ব্যাঙ্ক নির্দিষ্ট সময়সীমা ধার্য করে দিয়েছে। তার মধ্যেই ওই ঋণ শোধ করতে হবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি জানেন না ফের কবে ইউক্রেনে ফিরে যেতে পারবেন। কবে শেষ হবে তার কোর্স।
হামজা একা নন। একই পরিস্থিতি কলকাতার ছাত্রী তিয়াসা বিশ্বাসের। ৩৬ লাখ টাকা দিয়ে ইউক্রেনে পড়তে গেছেন তিনি। লড়াই শুরু হওয়ার কিছুদিন আগেও দেশে ফেরার কথা ভাবতে পারেননি তিয়াসা। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছিল, অফলাইন ক্লাস হবে। প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই থেকে যেতে হয়েছিল ইউক্রেনে। লড়াই শুরু হওয়ার পরে ১৬ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে, দুই রাত পোল্যান্ড সীমান্তে খোলা আকাশের নীচে প্রবল ঠান্ডায় কাটিয়ে কার্যত প্রাণ হাতে নিয়ে দেশে ফিরতে হয়েছে তাকে। তিয়াসা জানেন না, এরপর কী হবে? আদৌ কি ফিরে যেতে পারবেন তার স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে? কবে শেষ হবে লড়াই? শেষ পর্যন্ত কী হবে ইউক্রেনের ভবিষ্যত?
হামজা বা তিয়াসার চেয়ে বয়সে অনেকটাই বড় কিশোর সেন। নদিয়ার ছেলে কিশোর এমবিবিএসশেষ করে এমডি করছেন এখন। আর কয়েকমাস পরেই তার কোর্স শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে ডাক্তারি করার ইচ্ছে ছিল কিশোরের। নয় বছর ধরে তিনি ইউক্রেনে আছেন। তাকেও টাকা ফেরত দিতে হবে। কিয়েভে তার ফ্ল্যাটের সামনের বাড়িতে যেদিন বোমা পড়ল, তার পরদিনই দেশের উদ্দেশে রওনা হয়ে যান কিশোর। সঙ্গে এক বিশাল অনিশ্চিত ভবিষ্যত। কী হবে এরপর? এমডি শেষ করতে পারবেন তো?
ইউক্রেনে প্রায় ১৮ হাজার ভারতীয় ছাত্রছাত্রী ডাক্তারি পড়তে যান। কমবেশি সকলের পরিস্থিতিই এক। প্রাণ বাঁচিয়ে তাদের অনেকেই দেশে ফিরতে পেরেছেন হয়তো, কিন্তু রাতের ঘুম উড়ে গেছে। জানেন না এরপর কী হবে? কীভাবে পড়তে যাওয়ার ঋণ শোধ করবেন তারা?