ভারতে রাশিয়ার তেল: নাক গলাবে না জার্মানি
৫ এপ্রিল ২০২২অ্যামেরিকা-সহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন যখন রাশিয়া থেকে তেল এবং প্রাকৃতিক সম্পদ আমদানি কমানোর ব্যবস্থা করছে, তখন রাশিয়ার থেকে তেল কিনছে ভারত। ভারতের এই পদক্ষেপকে কীভাবে দেখছে জার্মানি? কূটনৈতিক মহলে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে। এনডিটিভি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতে জার্মানির রাষ্ট্রদূত ওয়াল্টার জে লিন্ডার জানিয়েছেন, এ বিষয়ে জার্মানির কোনো বক্তব্য নেই। এই সিদ্ধান্ত একান্তই ভারতের ব্যক্তিগত। জার্মানি সেখানে নাক গলাবে না।
লিন্ডারের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে ক্রেমলিনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ভারত যদি যুদ্ধ থামানোর বিষয়ে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পারে, তাহলে সেটাই হবে সবচেয়ে বড় বিষয়।
লিন্ডার জানিয়েছেন, গ্যাস, তেল এবং কয়লা আমদানির ক্ষেত্রে জার্মানি বরাবরই রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল। জার্মানি ভাবেনি, মস্কো প্রতিবেশী দেশে এভাবে যুদ্ধ শুরু করে দেবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জার্মানি চেষ্টা করছে, এবছরের শেষের মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল নেওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়ার। তবে কাজটি করতে সময় লাগবে। ইতিমধ্যেই আমদানি অনেক গুণ কমে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের তেল নেওয়ার প্রশ্নে লিন্ডার বক্তব্য, 'প্রতিটি দেশের নিজস্ব অতীত আছে। বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন দেশের উপর নির্ভরশীল। ফলে এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য আমরা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি।'
ইউক্রেন সংকটে ভারতের অবস্থান নিয়ে বিশ্ব কূটনীতিতে নানা আলোচনা চলছে। অ্যামেরিকা ভারতের উপর চাপ তৈরি করছে। বস্তুত, যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনার রাস্তা তৈরির বিষয়ে ভারত আগ্রহী হলেও জাতিসংঘে এখনো পর্যন্ত প্রতিটি ভোটেই মোদীর সরকার ভোটদানে বিরত থেকেছে। শুধু তা-ই নয়, সোমবারও এক অনুষ্ঠানে দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, ভারত রাশিয়ার কাছে থেকে কম দামে তেল কিনবে। কারণ, সবার আগে দেশের স্বার্থ।
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল সংস্থাগুলি ব্যারেল প্রতি ৩৫ ডলারে রাশিয়া থেকে তেল কিনছে। আগামী তিন-চার মাস রাশিয়ার থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন দেশের তেল এবং খনিজসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রীও।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে রাশিয়ার প্রসেডিন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের একাধিকবার কথা হয়েছে। যুদ্ধ থামাতে ভারত মধ্যস্থতা করতে রাজি বলে জানিয়েছেন মোদী। জার্মান রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য, এবিষয়ে পুটিনকে বোঝানো সবচেয়ে কঠিন কাজ। ভারত যদি তা করতে পারে, জার্মানি তাকে স্বাগত জানাবে।
এসজি/জিএইচ (এনডিটিভি, ব্লুমবার্গ, পিটিআই)