1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিমালদ্বীপ

ভারত-মালদ্বীপ সম্পর্কে আরো অবনতি

১৫ জানুয়ারি ২০২৪

মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরিয়ে নেয়ার কথা বললেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট। ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।

https://p.dw.com/p/4bEy6
শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের
চীনের দিকে ঝুঁকছে মালদ্বীপছবি: Liu Bin/Xinhua/IMAGO

ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ১৯৮৮ সালে মালদ্বীপের সরকার-বিরোধী অভ্য়ুত্থান দমন করেছিল ভারতীয় সেনা। যার নাম ছিল অপারেশন ক্যাকটাস। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ভারতীয় সেনা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উদ্ধারকাজ চালিয়েছে।

ভারত বরাবরই মালদ্বীপের পাশে থেকেছে কারণ, ভারতীয় মূল ভূখণ্ড থেকে মাত্র ৩০০ নটিকাল মাইলের মধ্যে মালদ্বীপ। লাক্ষাদ্বীপ থেকে মাত্র ৭০ নটিকাল মাইল দূরে। ভারত মহাসাগরের উপর অবস্থিত ছোট্ট এই দ্বীপ কৌশলগতভাবে ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই রাস্তাই হলো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ। অন্যদিকে, ভূরাজনৈতিক দিক থেকেও এই অঞ্চলটি ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

একারণে দীর্ঘদিন ধরেই মালদ্বীপে বিভিন্ন দিক থেকে বিনিয়োগ করেছে ভারত। সময় অসময়ে মালদ্বীপের পাশে দাঁড়িয়েছে। মালদ্বীপও ভারতকে 'বড় দাদা'র মতো দেখেছে। সমুদ্র দ্বীপটিতে ভারত একটি ছোট সেনা ঘাঁটি বানিয়েছে। যেখানে ৭০ জন ভারতীয় সেনা আছে। ভারত মহাসাগরে পেট্রলিং করেন এই সেনা অফিসারেরা। বস্তুত, এর মধ্যে ২৪ জন সেনা অফিসার আছেন একটি হেলিকপ্টারের আছে। ২৫ জন একটি ডরনিয়ার সেনা বিমানের দায়িত্বে। ২৬ জন আরেকটি হেলিকপ্টারের দায়িত্বে। দুইজন ইঞ্জিনিয়ার। এই দুইটি হেলিকপ্টার এবং ডরনিয়ার বিমানের সাহায্যে ভারত ওই অঞ্চলে নিজের সামরিক অবস্থান তৈরি করেছে।

মালদ্বীপের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু এই সম্পর্কটি ছিন্ন করতে চাইছেন। তার কারণ, নতুন এই প্রেসিডেন্ট চীনপন্থি। অতি সম্প্রতি চীনে গিয়ে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করে এসেছেন তিনি। সেখান থেকে ফিরেই ভারতীয় সেনা বাহিনী সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতকে সেনা সরিয়ে নিতে হবে। অন্যদিকে, চীনের সঙ্গে বেশ কয়েকটি নতুন চুক্তি করে এসেছেন তিনি। বিশ্বব্যাংকের হিসেব বলছে, মালদ্বীপের মোট ধারের ২০ শতাংশ চীনের কাছে। অর্থাৎ, মালদ্বীপে বিরাট পরিমাণ বিনিয়োগ করে ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে চীন। এবার তার পরিমাণ আরো বাড়বে।

ঠিক এই জায়গাতেই ভারতের চিন্তা। ভারতে 'প্রতিবেশী প্রথম' পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম দেশ মালদ্বীপ। সেখান থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার অর্থ ভূরাজনৈতিকভাবে ভারত মহাসাগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া। এবং একইসঙ্গে সেই কৌশলগত জায়গা চীনের হাতে তুলে দেওয়া। কূটনৈতিকভাবে ভারত নিশ্চয় চেষ্টা করবে আলোচনার মাধ্যমে এই পরিস্থিতির সুরাহা করতে। কিন্তু শেষপর্যন্ত তা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে কূটনৈতিক মহলে যথেষ্ট প্রশ্ন আছে।

ভারতীয় সেনার সাবেক লেফটন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''মালদ্বীপ থেকে সেনা প্রত্যাহার ভারতেরজন্য বড় ক্ষতি। তার চেয়েও বড় কথা, চীন সেখানে আধিপত্য কায়েম করলে ভারতের দুয়ারে থ্রেট তৈরি হবে। ফলে কূটনৈতিক সমাধানের রাস্তা খোঁজা অত্যন্ত জরুরি।''

এসজি/জিএইচ (পিটিআই)