1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর পিঠটান

১১ ডিসেম্বর ২০১৮

টানা বিক্ষোভ প্রশমন করতে মজুরি বাড়ানো, কর কমানোসহ নানা উদ্যোগ নেবার কথা জানিয়েছেন ‘অনমনীয়' হিসেবে পরিচিত ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ৷ তবে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারছেন না বিক্ষোভকারীরা৷

https://p.dw.com/p/39qSw
Frankreich Emmanuel Macron Rede an die Nation
ছবি: Reuters/J-P. Pelissier

দেশে বিদ্যমান সরকারবিরোধী ক্ষোভ ও আন্দোলনকে নিবৃত্ত করতে সোমবার বেশ কিছু অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ৷ প্রেসিডেন্টের রাষ্ট্রীয় ভবন এলিসি প্যালেস থেকে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ১৫ মিনিটের ভাষণে ৪০ বছর বয়সি এই রাজনীতিক বলেন, ‘‘(উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য) আমি দায়িত্ব স্বীকার করে নিচ্ছি৷''

অনমনীয় ও কঠিন হিসেবে পরিচিত এই সাবেক ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার ভাষণের সময় বেশ নমনীয় ছিলেন৷

‘‘আমি জানি, আমার নানা বক্তব্যে অনেকেই আহত হয়েছেন,'' বলেন তিনি৷

তবে এই জনগণের, বিশেষ করে ছোট শহর ও গ্রামের নিম্ন আয়ের মানুষের, এই ক্ষোভ বহু বছর ধরে সঞ্চিত হয়েছে বলে তিনি মনে করেন৷

‘‘এই ক্ষোভ একদিনের নয়৷ এমন চলতে থাকবে যেন আমরা মেনেই নিয়েছি,'' মাক্রোঁ বলেন৷ ‘‘৪০ বছরের অসহিষ্ণুতা আজ বেরিয়ে এসেছে৷''

মজুরি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত

ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট যেসব উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছেন, তার একটি হলো ন্যূনতম মাসিক মজুরি ১০০ ইউরো বাড়ানো৷ এই খরচ অবশ্য কোম্পানিগুলোকে দেখাতে হবে না৷ আগে ন্যূনতম মাসিক মজুরি করসহ ১ হাজার ৪শ' ৯৮ ও কর বাদে ছিল ১ হাজার ১শ' ৮৫ ইউরো৷  

এর আগে মাক্রোঁর সরকার মজুরি বাড়ানোর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল৷ তাদের বক্তব্য ছিল, মজুরি বাড়ালে চাকরির সুযোগ বাড়বে তো না-ই, বরং কমবে৷

মাক্রোঁর সিদ্ধান্তের কারণে তাঁকে এলিট বা ধনিক শ্রেণির প্রেসিডেন্ট বলে সমালোচনা করেছেন অনেকে৷

অনমনীয় অর্থনৈতিক সংস্কারক হিসেবে পরিচিত এই প্রেসিডেন্টের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত ছিল দূষণবিরোধী জ্বালানি কর আরোপ করা৷ এই সিদ্ধান্তে, বিশেষ করে ব্যক্তিগত গাড়ির ওপর নির্ভরশীল ছোট শহর ও গ্রামঞ্চলের মানুষরা ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়৷

প্যারিসের রাস্তায় বিক্ষোভ এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, মাক্রোঁর সরকার জ্বালানি কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করে৷ কিন্তু তাতেও দমেননি ‘ইয়েলো ভেস্ট' আন্দোলনকারীরা৷ তাদের বিক্ষোভ চলমান থাকলে শেষ পর্যন্ত এই ভাষণ দিতে বাধ্য হন ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট৷

২০১৭ সাল থেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করা মাক্রোঁ এছাড়াওপেনশনের আয়ের ওপর কর বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, সেখান থেকেও সরে দাঁড়ানোর ঘোষণাদিয়েছেন৷ এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান বছর শেষে কর্মীদের বোনাস দিতে পারবে, সেই বোনাসও করমুক্ত থাকবে বলে জানান তিনি৷

মাক্রোঁর বক্তব্য ‘প্রহেলিকা ও ধাপ্পাবাজি'

মাক্রোঁর বক্তব্যকে ‘প্রহেলিকা' ও ‘ধাপ্পাবাজি' বলে উল্লেখ করেছেন হলুদ জ্যাকেট পড়া আন্দোলনকারীদের একটি অংশ৷ তারা বলছেন, মাক্রোঁ যা দেবার কথা বলেছেন তা সমুদ্রের মাঝে এক ফোঁটা জল৷

দক্ষিণাঞ্চলের শহর লা বোলো'তে এক সমাবেশে জ্যঁ-মার্ক নামের এক গাড়ি মেকানিক বলেন, ‘‘তিনি এক আঙুলের ওপর ভর করে নাচছিলেন৷ এখন গোঁড়ালির ওপর দাঁড়াতে চাচ্ছেন৷ তাঁর সব প্রতিশ্রুতি ধোঁয়াশায় ভরা৷''

থিয়েরি নামের ৫৫ বছর বয়সি এক বাইসাইকেল মেকানিক দাবি করেন, ‘‘মিডিয়ার জন্য এসব কথা বলেছেন তিনি৷''

বিরাট আর্থিক ক্ষতি

এদিকে, ফ্রান্স সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত কিছুদিন ধরে চলা দেশব্যাপী বিক্ষোভে ৮শ' থেকে ১ হাজার কোটি ইউরোর আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷

 স্থানীয় ব্রডকাস্টার বিএফএম-টিভিতে দেয়া সাক্ষাৎকারে সরকারের এক মুখপাত্র এ তথ্য জানান৷ তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় বাজেট থেকে অর্থ সংস্থান করে এ ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া হবে৷

বিক্ষোভে গাড়ি ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ভাঙচুর, রাস্তা বন্ধ করা ও শহরগুলোর কেন্দ্রে রায়ট চালানো হয়৷ এতে স্থানীয় ব্যবসাগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷

জেডএ/এসিবি (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য