মানব উন্নয়নে এগোচ্ছে বাংলাদেশ: মোরশেদ
৪ নভেম্বর ২০১১মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন বা ইউএনডিপি-র বার্ষিক রিপোর্টে সচরাচর গোটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানব উন্নয়ন পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করা হয়ে থাকে৷ এবারের রিপোর্টে বাংলাদেশের মানব উন্নয়নের সূচকের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, প্রতিবেদনটি দু'টো তিনটে দিক একসঙ্গে দেখাচ্ছে৷ দেখা যাচ্ছে মানব উন্নয়নের সূচকে বাংলাদেশ গত এক বছরে এক শতাংশ এগিয়েছে৷ গত বছরে যেটা ছিল, দশমিক চার নয় ছয় বা ০.৪৯৬, এবার সেই সূচক বেড়ে হয়েছে ০.০৫৷
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ১৯৮০ সাল থেকে পরিসংখ্যান নিয়ে দেখা যাচ্ছে, গত ত্রিশ বছরে বাংলাদেশের মানব উন্নয়ন সূচক বেড়েছে ৬৫ ভাগ৷ যা কিনা, গোটা বিশ্বেই মানব উন্নয়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভালো একটি নজির৷
মানব উন্নয়নের সঙ্গে আর যেটার মাপজোক নিয়ে ইউএনডিপি কাজ করে থাকে, তাহল বৈষম্যের পরিমাণ৷ ধনী দরিদ্রের অসাম্যের এই পরিমাণ কমাতেও বাংলাদেশ বেশ ভালো নজির তৈরি করেছে৷ গত বছরের হিসেবে এই অসাম্যের মাপ ছিল ২৯.৪ শতাংশ৷ সেটা এবার কমে দাঁড়িয়েছে ২৭.৪ মাত্রায়৷ যার অর্থ বৈষম্য কমছে সমাজে৷
লিঙ্গসমতা ভিত্তিক উন্নয়নের সূচকে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ বেশ চোখে পড়ার মত উন্নতি করেছে এই ক্ষেত্রে৷ কারণ, মাতৃমৃত্যুর হার অনেকখানি কমেছে বাংলাদেশে৷ তার প্রভাবেই লিঙ্গসমতা ভিত্তিক উন্নয়ন সম্ভবপর হয়েছে ২৫ শতাংশের মত৷
দারিদ্র্য কমানোর ক্ষেত্রে এবারের ইউএনডিপি-র প্রতিবেদন বলছে, দারিদ্র্যের পরিমাণ ৪৯ শতাংশ থেকে কমে ৩১.৫ শতাংশ হয়েছে বাংলাদেশে৷ মোরশেদ ২০০৫ সালের পরিসংখ্যান দিয়ে জানাচ্ছেন, সে সময়ে পদ্মানদীর একপাশে রংপুর, দিনাজপুর থেকে শুরু করে অন্যান্য অতি দরিদ্র জেলাগুলি ছিল৷ আর পদ্মার অন্য পারে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামের মত ধনী জেলাগুলির অবস্থান ছিল৷ এখন কিন্তু দেখা যাচ্ছে, উন্নয়নের প্রভাব যেহেতু কার্যকর ছাপ ফেলেছে, সুতরাং সেই জেলাভিত্তিক দারিদ্র্য এখন আর নেই৷ মোরশেদ জানাচ্ছেন, উন্নয়নের পরিভাষায় লেপার্ড স্কিন বা চিতাবাঘের চামড়ার কালো ছোপের মত দারিদ্র্যের কিছু ছোপ রয়ে গেছে দেশের বিভিন্ন অংশে৷ কিন্তু সামগ্রিকভাবে দারিদ্র্যের পরিমাণ কমছে যে তার ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা : আবদুল্লাহ আল-ফারূক