মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিরোধী নেতার জয়
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহকে নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়৷ ইয়ামিনের চেয়ে বিপুল ভোটে এগিয়ে আছেন তিনি৷
প্রাথমিক ফলে ৫৮.৩ শতাংশ ভোট পাওয়ায় সোলিহকে নির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন৷ বিজয়া হওয়ার পর প্রথম ভাষণে জয়ের মুহূর্তকে ‘আনন্দ ও আশার এবং ঐতিহাসিক' বলে বর্ণনা করেছেন৷
তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনকে জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, ‘‘জনগণের বার্তা খুব স্পষ্ট৷ তাঁরা ন্যায়বিচার ও স্থিতিশীলতা চান৷ আমরা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবো৷''
নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি মালদ্বীপও এক টুইটে নিজেদের স্বাধীন জরিপের ভিত্তিতে সোলিহর বিজয়ের তথ্য নিশ্চিত করেছে৷
স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে এক সরাসরি প্রচারিত টেলিভিশন ভাষণে পরাজয় স্বীকার করে দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রেসিডিন্ট ইয়ামিন৷
তিনি বলেন, ‘‘গতকালের নির্বাচনের ফল আমি মেনে নিয়েছি৷ আমি জানি আমাকে সরে দাঁড়াতে হবে৷''
পাঁচ বছরের শাসনামলে বিরোধীদের ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন চালিয়েছেন ইয়ামিন৷ নিজের সৎ ভাই মামুন আবদুল গাইয়ুমসহ বিরোধীদলীয় অনেক নেতাকে আটক করেছিলেন তিনি৷ মামুন দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে মালদ্বীপ শাসন করেছেন৷
ইয়ামিন জানিয়েছেন, সংবিধান অনুযায়ী তাঁর মেয়াদ শেষ হবে ১৭ নভেম্বর৷ তারপর হস্তান্তর হবে ক্ষমতা৷
শংকার মধ্যে ভোট
সোলিহর জয় অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত ছিল৷ বিরোধী গণমাধ্যমও দমনের ভয়ে অনেকটাই নীরব ভূমিকা পালন করেছে৷ প্রেসিডেন্টের সমর্থকরা ভোটে জালিয়াতির চেষ্টা করতে পারে বলেও হুঁশিয়ার করেন সোলিহ৷ নির্বাচনের আগের রাতে তাঁর দলীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ৷
অনিয়মের হুমকির মধ্যেও নির্বাচন ‘সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ' হয়েছে বলে জানিয়েছে মালদ্বীপের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ ৪ লাখ মানুষের দেশটিতে ভোট দেয়ার যোগ্যতা ছিল আড়াই লাখেরও বেশি মানুষের৷ ভোটার উপস্থিতি ছিল ৮৯.২ শতাংশ৷
অনেক ভোটারই বলছেন, পরিবর্তনের আশায় তাঁরা এবার ভোট দিতে এসেছেন৷ রয়টার্সকে নাজিমা হাসান নামের এক ভোটার জানান, ‘‘২০১৩ সালে করা এক ভুল শোধরাতে এসেছি আমি৷''
নির্বাচনের শেষের দিকে যখন সোলিহ-এর বিজয়ের আভাস মিলছিল, তখন থেকেই মালের রাস্তায় পতাকা হাতে উল্লাসে মেতে ওঠেন তাঁর সমর্থকরা৷
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
মালদ্বীপে প্রভাব বিস্তার করা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে আঞ্চলিক শক্তি ভারত ও চীনের মধ্যে৷ সোলিহের বিজয়ে সবার আগে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছে ভারত৷
অবকাঠামো উন্নয়নে ইয়ামিনের সরকারকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ধার দেয়া চীন অবশ্য এখনও নির্বাচনের ফল নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য জানায়নি৷
এডিকে/ডিজি (এপি, এএফপি)