‘রোহিঙ্গাদের উপর হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত’
২৫ অক্টোবর ২০১৮আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে এর বিচার দাবি করেছেন তাঁরা৷ জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের চেয়ারম্যান মারজুকি দারুসমান জানিয়েছেন, গণহত্যার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্মহার কমানো এবং বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে স্থানান্তরও চলছে৷ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘এটা চলমান গণহত্যা৷’’ ৪৪৪ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ রয়েছে৷ সেগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে এসবের বিচার হওয়া উচিত অথবা যুগোস্লাভিয়ার নতুন কোনো ট্রাইব্যুনাল গঠন করা যেতে পারে৷
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ শীর্ষ সেনাকর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রাখাইনে গণহত্যা চালানোর অপরাধে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করা উচিত৷ গত বছর রাখাইনে সহিংসতা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ৭ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা৷ এই সহিংসতায় ৩৯০টি গ্রাম পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, নিহত হয়েছে ১০ হাজার রোহিঙ্গা৷
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ইয়াংহি লি বলেছেন, ‘‘শান্তিতে নোবেল জয়ী নেত্রী অং সান সুচি ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতি অনেক বদলে যাবে বলে ধারণা করেছিলেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়৷ কিন্তু বাস্তবতা হলো অতীত পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তনই হয়নি, বরং আরো খারাপ হয়েছে৷’’
মারজুকি দারুসমান হুঁশিয়ার করে বলেন, মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি রোহিঙ্গাদের জন্য একেবারেই নিরাপদ নয়৷ ফলে বাংলাদেশ থেকে তাঁদের ফিরিয়ে দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না৷ এরকম ঘটনা ঘটলে আরো অনেক মানুষের প্রাণহানির সম্ভাবনা তৈরি হবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন তিনি৷
মিয়ানমার সরকার যথারীতি জাতিসংঘের এই তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে৷ এর নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা৷ এশিয়ার কূটনীতিকদের নিয়ে একটি স্বতন্ত্র তদন্ত কমিশন গঠনের কথা জানিয়েছে তারা৷ তবে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন জানিয়েছে, তাদের তদন্তে এমন সব তথ্য-প্রমাণ রয়েছে, যাতে স্পষ্টই বোঝা যায়, রোহিঙ্গাদের পুরোপুরি নির্মূল করতেই মিয়ানমার এই নিপীড়নের পথ বেছে নিয়েছে৷
এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)
২৩ আগস্টের ছবিঘরটি দেখুন...