1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিচারের মুখোমুখি হবে সুচি?

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ঢাকায় শান্তিতে নোবেলজয়ী তিন নারী বলেছেন, ‘‘অং সান সুচি যদি নিরবতা ভেঙে রোহিঙ্গাদের পাশে না দাঁড়ান, তাহলে তাঁকেও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে৷ কারণ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছে৷ এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ৷''

https://p.dw.com/p/2tSuT
Bangladesch, Dhaka, Drei Friedensnobelpreis-Gewinner bei Pressekonferrenz
ছবি: Nasirul Islam/Bangla Tribune

তিন নোবেলজয়ী নারী – ইরানের শিরিন এবাদি, আয়ারল্যান্ডের মারেইড ম্যাগুয়ার এবং ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান রবি, সোম ও মঙ্গলবার  রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন৷ তাঁরা সেখানে রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষদের সঙ্গে কথা বলেন৷ জানেন তাঁদের ওপর হত্যা, ধর্ষণ এবং নির্যাতনের কথা৷ বুধবার দুপুরের পর তাঁরা ঢাকায় সাংবাদিকদের কাছে তাঁদের সেই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন৷

ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান বলেন, ‘‘আমরা অন্তত ১০০ রোহিঙ্গা নারীর সঙ্গে কথা বলেছি৷ এঁরা সবাই মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ধর্ষণের শিকার হয়েছেন৷ সন্তানের সামনে মাকে, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে৷ এমন অনেক শিশু পেয়েছি, যাদের মা-বাবাকে হত্যা করা হয়েছে৷ আগুনে ছুড়ে হত্যা করা হয়েছে শিশুদের৷''

সন্তানের সামনে মাকে, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে

তিনি বলেন, ‘‘রাখাইনে এ সমস্ত অপরাধ করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকার৷ নোবেল বিজয়ী অং সান সুচি সরকার প্রধান হয়েও চুপ করে আছেন এবং এ জন্য তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী৷'' 

কারমান  সুচিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘আপনাকে সত্য প্রকাশ করতে হবে৷ রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে৷ অন্যথায় আপনাকেও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে৷ আমরা নোবেল বিজয়ী হিসাবে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যারা এই অপরাধের সাথে জড়িত তাদের সবাইকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে৷''

মারেইড ম্যাগুয়ার বলেন, ‘‘আমরা সবাই মানব পরিবারের সদস্য৷ অং সান সুচি যখন গৃহবন্দি ছিলেন, তখন তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী কার্যক্রমের জন্য আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম৷ তাই তাঁর এখন মনে রাখা উচিত, রোহিঙ্গাদেরও মানবিক অধিকার আছে৷ তাঁদের ওপর যে হত্যা নির্যাতন চালানো হয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার নয়৷''

মিয়ানমার সফরের জন্য আমরা ভিসার অ্যাপ্লাই করবো

আন্তর্জাতিক আদালতে এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইরানের শিরিন এবাদি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক আদালতে এই বিচার কাজের জন্য দু'টি উপায় রয়েছে৷ একটি হচ্ছে, সেই দেশটি যদি আন্তর্জাতিক আদালতের সদস্য হয়ে থাকে তাহলে তাকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া যায়৷ দ্বিতীয়টি হচ্ছে, তারা যদি এই সংস্থার সদস্য না হয় তাহলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশক্রমে আন্তর্জাতিক আদালতে এদের বিচার সম্ভব৷''

সুদানের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দেশটি আন্তর্জাতিক আদালতের সদস্য ছিল না, কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের হস্তক্ষেপের কারণে সুদানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হয়েছে৷''

শিরিন এবাদির কথায়, ‘‘মিয়ানমার সফরের জন্য আমরা ভিসার অ্যাপ্লাই করবো৷ তারা যদি আমাদের ভিসা না দেয় তাহলে সেটি মিয়ানমারের জন্য ভুল হবে৷''

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত 

সুচির মনে রাখা উচিত, রোহিঙ্গাদেরও মানবিক অধিকার আছে

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে এই তিন নোবেলজয়ী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন৷ নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে তাঁরা বলেন, মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের হত্যা নির্যাতনের দায় নিতে হবে৷

এছাড়া তাঁরা রাখাইনের ঘটনাকে গণহত্যা হিসাবে বর্ণনা করে বলেন, ‘‘এরপরও বিশ্ব সম্প্রদায় কীভাবে নীরব রয়েছে, তাতে আমরা বিস্মিত৷''

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, ‘‘বাংলাদেশ মানবিক কারণে দশ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে নিজ মাটিতে আশ্রয় দেয়ায় শেখ হাসিনার প্রশংসা করে তাঁকে ‘কাইন্ড মাদার' হিসাবে অভিহিত করেন এই তিন নোবেলজয়ী৷'' নোবেল উইমেন'স ইনিশিয়েটিভ এবং নারীপক্ষ এই তিন নোবেল বিজয়ী নারীর বাংলাদেশ সফরের আয়োজন করে৷ এঁরা বিশ্বের কাছে রোহিঙ্গাদের কথা তুলে ধরবেন৷

প্রতিবেদনটি আপনার কেমন লাগলো? জানান আমাদের, লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান