ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা
১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩১৯৯৯ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কারগিল যুদ্ধের কয়েক মাস আগে পাকিস্তানের তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল পারভেজ মুশাররফ নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে ঐ এলাকা পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে হেলিকপ্টারে ভারতীয় এলাকার ১১ কিলোমিটার ভেতরে অনুপ্রবেশ করেছিলেন৷ শুধু তাই নয়, সেখানে এক রাতও নাকি কাটান তিনি৷ এমনই চাঞ্চল্যকর এক অভিযোগ এনেছেন পাকিস্তানের অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আসফাক হুসেন, যিনি মুশাররফের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত৷ ভারতের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, এই অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তাহলে সেটা ভারতের সামরিক ও অসামরিক গোয়েন্দা বিভাগের চরম ব্যর্থতা৷
কর্নেল আসফাক এ কথা লিখেছেন তাঁর নিজের লেখা ‘‘উইটনেস টু ব্লান্ডার'' বইয়ে৷ সেখানে তাঁর অভিযোগ, কারগিল যুদ্ধের ছক এমন একটা সময় জেনারেল মুশাররফ করে রেখেছিলেন, যখন ভারত-পাকিস্তান শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে লাহোর বাস যাত্রা শুরু করেছিলেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী ৷
সে সময় ভারতের সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল ভি.কে মালিক৷ এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল মালিক বলেন, ভারতীয় সেনার কাছে পাকিস্তানিদের অনুপ্রবেশের খবর ছিল৷ মুশাররফ অগ্রবর্তী এলাকা পরিদর্শনে হয়ত যেতে পারেন, কিন্তু ভারতীয় এলাকায় অনুপ্রবেশ করেছিলেন কিনা – তা বলতে পারবো না৷
পাশাপাশি কারগিল অভিযান নিয়ে মুশাররফকে কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তৎকালীন পাক-গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর দায়িত্বে থাকা পাকিস্তানের আর এক অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল শাহিদ আজিজ৷ তাঁর অভিযোগ, কারগিল যুদ্ধের ছক জানতেন স্রেফ মুশাররফ এবং তাঁর চারজন জেনারেল৷ এ বিষয়ে গোটা সেনাবাহিনীকে রাখা হয়েছিল অন্ধকারে৷
এই অভিযোগ খণ্ডন করতে মুশাররফ মুখ খুলতেই বেড়ে গেল ইসলামাবাদের অস্বস্তি৷ কারগিল যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের জন্য তিনি সরাসরি দায়ী করেন তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে৷ মুশাররফের কথায়, নওয়াজ শরিফকে সবকিছু জানানো হয়৷ অথচ তাঁর দুর্বলতার জন্যই কারগিলে আমাদের লোকসান হয়৷ ওখান থেকে সরে আসতে হয় আমাদের৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপে নওয়াজ শরিফ মাথা না নোয়ালে ভারতের ৩০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা আজ থাকত পাকিস্তনের দখলে৷