মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনার আহ্বান
৮ আগস্ট ২০১৬সমাবেশে বক্তব্য
গত মাসের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর তুরস্কে এটাই সবচেয়ে বড় জনসমাবেশ, যেখানে ক্ষমতাসীন দলগুলোর নেতারা থেকে শুরু করে দেশটির তিনটি বিরোধীদলের মধ্যে দু'টির নেতারা উপস্থিত ছিলেন৷ তবে কুর্দি কোনো রাজনৈতিক দলকে সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি৷ ‘গণতন্ত্র ও শহিদদের জন্য' আয়োজিত জনসভাটিতে অন্ততপক্ষে দশ লাখ মানুষ জড়ো হয়েছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন৷
তবে জনসভায় ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করেছে স্থানীয় গণমাধ্যম৷ ইয়েনিকাপি প্যারেড গ্রাউন্ড-এর আশপাশের রাস্তা ও এলাকাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছিল মানুষ৷ সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনকে তুরস্কের কাছে হস্তান্তর করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান এর্দোয়ান৷ গত সপ্তাহে গুলেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আঙ্কারা৷
রোববার ইস্তানবুলের ইয়েনিকাপি প্যারেড গ্রাউন্ডের ওই জনসভায় তিনি বলেন, পার্লামেন্ট ও জনগণ যদি চায় তাহলে ‘মৃত্যুদণ্ড' অনুমোদন করবেন৷ সমাবেশে উপস্থিতদের উদ্দেশ্যে এর্দোয়ান বলেন, ‘‘মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে তুরস্কের পার্লামেন্ট৷'' তিনি বলেন, ‘‘ইইউ-তে কোনো মৃত্যুদণ্ডের বিধান নেই৷ কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে আছে, জাপানে আছে, চীনেও আছে৷ বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই আছে৷ সার্বভৌমত্ব জনগণের উপর নির্ভর করে, তাই জনগণ যদি চায় তিনি নিশ্চিত রাজনৈতিক দলগুলোও তা বাস্তবায়ন করবে৷'' সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর থেকেই এর্দোয়ানের সমর্থকরা দেশব্যাপী প্রতি রাতে সমাবেশ করে আসছেন৷
ইইউ-এর বক্তব্য
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বরাবরই বলে আসছে, তুরস্কে মৃত্যুদণ্ডের বিধান ফিরিয়ে আনলে দেশটি ইইউ-তে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না৷ অথচ এই অন্তর্ভুক্তির জন্য গত কয়েক দশক থেকে চেষ্টা করে আসছে আঙ্কারা৷ ইইউ-এর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে তুরস্কের সঙ্গে সব ধরনের আলোচনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা৷
জার্মান কর্তৃপক্ষের সমালোচনা
জার্মানির কোলোন শহরে সমাবেশে তার বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচারে বাধা দেয়ায় জার্মান কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান৷ তিনি বলেন, জার্মানি গণতন্ত্রের কথা বলে অথচ তাদের আচরণে সেটা প্রকাশ পায়নি৷ এর আগে কুর্দিশ পার্টি পিকেকে-র বক্তব্য প্রচারে অনুমতি দেয়া হয়েছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, জার্মানি যদি জঙ্গিদের মদদ দিতে চায় তবে বুমেরাং হয়ে সেটার প্রভাব তাদের উপরই পড়বে৷
দমন-পীড়ন অব্যাহত
তুরস্কের কর্তৃপক্ষ বলছে, অভ্যুত্থান চেষ্টার পর এ পর্যন্ত ৬০ হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি হারিয়েছেন৷ ২০ হাজার শিক্ষকের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে৷ আটক করা হয়েছে ২৫ হাজার মানুষকে, যাদের মধ্যে ১৩ হাজারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে৷ এদের অনেকের পাসপোর্টও বাতিল করা হয়েছে৷ সামরিক বাহিনীতেও ব্যাপক রদবদল করা হয়েছে৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)