মেঘনায় লঞ্চডুবি
১৬ মে ২০১৪মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসান বাদল ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর কালিপুড়া এলাকায় মেঘনা নদীতে লঞ্চটি ডুবে যায়৷''
লঞ্চটি রাজধানী ঢাকার সদরঘাট থেকে শরীয়তপুরের সুরেশ্বর যাওয়ার পথে ঝড়ের কবলে পড়ে৷ এমভি মিরাজ-৪ নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চটিতে ৩০০ জনের বেশি যাত্রী ছিল বলে জানান তিনি৷
লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পর পরই স্থানীয় লোকজন উদ্ধারকাজ শুরু করেন৷ সন্ধ্যার পর উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ও দুর্বার ঘটনাস্থলে পৌঁছায়৷ জেলা প্রশাসক জানান, ডুবে যাওয়া লঞ্চটির অবস্থান নির্ণয়ের পর সেটি উদ্ধারের কাজ শুরু হবে৷
শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত উদ্ধার করা ২৭টি মৃতদেহের মধ্যে দুটি শিশুর লাশও আছে বলে জানান তিনি৷
ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় সাংবাদিক টিটো রহমান ডয়চে ভেলকে জানান, ‘‘জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিআইডাব্লিউটিএ-র কর্মকর্তারা লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই ঘটনাস্থলে হাজির হন৷ তবে তার আগে স্থানীয় মানুষ নৌকা এবং ইঞ্জিন বোট নিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেন৷ তাঁরাই মূলত ভেসে যাওয়া লাশ উদ্ধার করেন৷''
তিনি জানান, লঞ্চটির অধিকাংশ যাত্রীই শরীয়তপুর-ফরিদপুর এলাকার বাসিন্দা৷ লঞ্চটি হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায় বলে জানান তিনি৷
টিটো জানান, ডুবে যাওয়া লঞ্চের যাত্রীদের আত্মীয়-স্বজনরা এরই মধ্যে মেঘনার তীরে আসতে শুরু করেছেন৷ সেখানে স্বাভাবিকভাবেই এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে৷
গজারিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল করিম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘রাতেই উদ্ধার অভিযান শুরু হবে৷ তবে রাত ও আবহাওয়ার উপর নির্ভর করছে কত সময় লাগবে৷''
বাংলাদেশে এই মৌসুমে প্রতিবছর যাত্রীবহী লঞ্চডুবির ঘটনা বেড়ে যায়৷ গত ৩রা মে পটুয়ায়াখালীতে শতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি লঞ্চ ডুবে গিয়েছিল৷ এতে ১২ জনের মৃত্যু হয়৷
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার মেঘনায় ডুবে যাওয়া লঞ্চটি ছিল তিন তলার৷ কিন্তু তিন তলা লঞ্চ আইনত অবৈধ৷ প্রসঙ্গত, ১৯৭৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত লঞ্চডুবিতে বাংলাদেশে ৫ হাজারেরও বেশি যাত্রী নিহত হয়েছেন৷