যুক্তরাষ্ট্রের গির্জায় ইস্টার জমায়েতের ঘোষণা
১০ এপ্রিল ২০২০আগামী পরশু ইস্টার সানডে৷ সাধারণত এদিন চার্চগুলোতে বড় করে প্রার্থনা ও সেবার আয়োজন করা হয়৷ কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন৷ নতুন করোনা ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবে যুক্তরাষ্ট্রসহ ভুগছে পুরো বিশ্ব৷ এ অবস্থায় প্রায় সব দেশেই একজায়গায় বেশি লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ বন্ধ করা হয়েছে গির্জা, মসজিদ, সিনাগগ, মন্দিরসহ বিভিন্ন উপাসনালয়ে বড় জমায়েত৷ ইস্টার সানডেতে পৃথিবীর বেশিরভাগ চার্চই সেই নির্দেশ মান্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ যুক্তরাষ্ট্রেও অধিকাংশ মানুষ ঘরে বসেই উদযাপন করবেন এই ধর্মীয় উৎসবটি৷ কিন্তু সে দেশের কয়েকটি গির্জা বেঁকে বসেছে৷ তারা বলছে, গির্জা খুলে মানুষকে ঢুকতে দেয়া তাদের অধিকার৷
‘‘শয়তান ও একটি ভাইরাস আমাদের থামাতে পারবে না,’’ লুজিয়ানার বাটন রুজের কাছে একটি চার্চের যাজক রেভারেন্ড টনি স্পেল বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ কথা বলেন৷ তিনি আশা করছেন রোববার দুই হাজারের বেশি মানুষ জড়ো হবেন চার্চে৷
‘‘ইশ্বর যে কোন দুর্যোগ ও অসুখ থেকে আমাদের বাঁচাবেন,’’ স্পেল বলেন৷ ‘‘আমরা ভয় পাই না৷ মার্কিন ভূখণ্ডে যিশুবিরোধী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে ইশ্বর আমাদের আদেশ করেছেন৷ আমরা যিশুর এ আহ্বান ছড়িয়ে দেবো৷’’
এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন চার লাখ ৩১ হাজারেরও বেশি মানুষ৷ মারা গেছেন ১৪ হাজার সাতশ'রও বেশি৷ কর্তৃপক্ষ আরো খারাপ অবস্থার আশঙ্কা করছে৷ এ অবস্থায় ইস্টারে প্রধান ক্যাথলিক ও প্রটেস্ট্যান্ট চার্চগুলো অনলাইনে প্রার্থনা ও সেবার আয়োজন করবে৷ এমনকি যেসব সংগঠন ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করে, তারাও এ সময় কোনো প্রতিবাদ করছে না এই যুক্তিতে যে, শুধু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, বিধিনিষেধ জারি হয়েছে সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের ওপর৷ মানুষের নিরাপত্তাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে তারা৷
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্য ইডাহোতে আমন বান্ডি নামের স্থানীয় এক নেতা কয়েকশ' মানুষ নিয়ে ইস্টার পালনের ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানাচ্ছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো৷ অন্যদিকে, ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের লোদি শহরে লকডাউন ঘোষণার পর একটি এভানজেলিকাল ক্রস কালচার সেন্টারের তালা বদলে তা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ৷ এরপরও এর যাজক জন ডানকান তার ৮০ জন অনুসারীকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন গেল রোববার৷ যেহেতু ইস্টার সানডেতেও চার্চটি তালাবদ্ধ থাকবে, তাই তিনি অনুসারীদের সববেত হবার জন্য বিকল্প জায়গার ঘোষণা দেবেন বলে জানিয়েছেন৷ চার্চটির অ্যাটর্নি এমনকি শহর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন৷
‘‘একটা ভাইরাস আমাদের অধিকার হরণ করবে তা আমরা মানি না,’’ বলেন তিনি৷ আরো বলেন, ‘‘আমরা নরকের দরজার বিপরীতে দাঁড়িয়ে ইশ্বরকে স্মরণ করবো৷’’
জেডএ/এসিবি (রয়টার্স)